জাতীয়লিড নিউজ

সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে ভিন্ন পথে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি

বিএনপি সংসদে সংস্কার চায়, জামায়াত গণভোটে, আর এনসিপি গণপরিষদের মাধ্যমে—ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ রাজনৈতিক দলগুলো

এবিএনএ: বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়নের পথ নিয়ে একমত হতে পারছে না। বিএনপি জানিয়েছে, নতুন সংসদ গঠনের পরই সংস্কার কার্যকর করতে হবে। অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চায় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ গঠন করে তা বাস্তবায়ন করা হোক। আর জামায়াতে ইসলামী জোর দিচ্ছে গণভোট অথবা রাষ্ট্রপতির ঘোষণার ওপর।

শনিবার জামায়াত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায় যে, জনগণের ভোট বা রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত ছাড়া এই সংস্কার পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না। এর আগে, গত বুধবার বিএনপি জানায় জুলাই সনদকে তারা রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল মনে করে, তবে সংসদকেই সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাখতে চায়।

এনসিপি এর বিপরীতে বলছে, জুলাই সনদকে গাইডিং প্রিন্সিপাল হিসেবে ধরে গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন করতে হবে। অন্যদিকে, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল এখনও মতামত দেয়নি, তবে তারা নির্বাচনের আগে সনদ কার্যকর করার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

ঐকমত্য কমিশনের ছয়টি পৃথক কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একাধিক দফায় সংলাপ হয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি সুপারিশে সব দলের ঐকমত্য হলেও বাকিগুলোতে তীব্র মতভেদ রয়েছে। বিশেষ করে সংসদে উচ্চকক্ষ গঠন, পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি, দুদক ও অন্যান্য নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির অবস্থানে বড় ধরনের ফারাক তৈরি হয়েছে।

জুলাই সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, এর প্রাধান্য থাকবে সংবিধানের ওপরে এবং আদালতে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। তবে বিএনপি এতে আপত্তি জানিয়েছে, কারণ তাদের মতে সংবিধানই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। বিপরীতে জামায়াত বলছে, জনগণের অভিপ্রায়কে ভিত্তি করে সনদ ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ আইনি মর্যাদা পেয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর এই ভিন্নমতের কারণে সনদ বাস্তবায়নের পথ আরও দীর্ঘ হচ্ছে। কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং দ্রুতই আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button