গাজা দখল পরিকল্পনায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়
বিশ্বনেতাদের সতর্কবার্তা—এই পদক্ষেপ কেবল ধ্বংস ও মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে, সমাধান নয়


এবিএনএ: গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা ঘোষণা করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বিশ্বনেতারা বলছেন, এই পদক্ষেপ কোনো সমাধান আনবে না, বরং ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ও ধ্বংস ডেকে আনবে। সম্প্রতি ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে, যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সামরিক অভিযানকে ‘ভুল’ আখ্যা দিয়ে উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানান। তার মতে, এই আক্রমণ জিম্মিদের মুক্তি বা সংঘাতের সমাধান নয়, বরং রক্তপাত বাড়াবে। একইভাবে চীনও এই পরিকল্পনা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে গাজাকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ ঘোষণা দিয়েছেন, গাজায় ব্যবহারের জন্য কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানি করা হবে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায়ের পরিপন্থী এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নেতানিয়াহুর পরিকল্পনাকে অবৈধ ও অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন। হামাস সতর্ক করে বলেছে, এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে। এমনকি ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিডও এই পরিকল্পনার নিন্দা করেছেন, দাবি করেছেন নেতানিয়াহু চরম ডানপন্থীদের চাপে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
নেতানিয়াহু নিজে বলেছেন, গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামাসকে সরিয়ে দেওয়াই লক্ষ্য। তবে ইসরায়েলের সামরিক প্রধান ইয়াল জামির সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ জিম্মিদের বিপদে ফেলবে এবং সেনাবাহিনীর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
এদিকে মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে যাতে সব জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধ থামানো ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। কিন্তু গাজা শহরে ইসরায়েলের বারবারের বোমাবর্ষণ ও হামলার ফলে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছেছে। বর্তমানে এই অঞ্চলে দখল করার মতো তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, গত ২২ মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬১ হাজার ২৫৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৫ জন আহত হয়েছে।