

এবিএনএ: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশ দিলেও, অধিকাংশ হাসপাতাল জানিয়েছে—এ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নেয়নি।
দুর্ঘটনার পর মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে উত্তরা অঞ্চলের চারটি বেসরকারি হাসপাতালে ১৫০ জনেরও বেশি আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষ বলছেন—সরকারি নির্দেশনার আগে থেকেই তারা বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. বজলুর রহমান আদিল বলেন, “বার্ন রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু—স্যালাইন, ড্রেসিং সেট, ক্রিম—আমরা বিনামূল্যে দিয়েছি। পরে সরকারের নির্দেশনা দেখেছি, কিন্তু কেউ আমাদের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের উপস্থিতি থাকলে দুর্ঘটনার সময় আরও ভালো সমন্বয় হতো। যদিও অনেক বেসরকারি সংস্থা সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে।”
বুধবার সরেজমিনে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল, উত্তরা ক্রিসেন্ট ও শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখা যায়—বিমান দুর্ঘটনার রোগীদের বেশিরভাগই চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।
হাসপাতালগুলোর চিত্র:
-
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ:
১০০ জন চিকিৎসা নেন, গুরুতর আহত ৪০ জনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়, রাতেই অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। -
লুবানা জেনারেল হাসপাতাল:
২৭ জন এসেছিলেন, ১৪ জনকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে, একজনের মৃত্যু হয়। -
উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল:
দগ্ধ ১২ শিক্ষার্থী এসেছিল, ৫ জন পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে, বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। -
শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ:
১৩ জন এসেছিলেন, ভর্তি ছিলেন ৫ জন। একজন বাসচালক আইসিইউতে ছিলেন, পরে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে:
মাইলস্টোন স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমান জানান, “চিকিৎসার জন্য কোনো টাকা লাগেনি, কিন্তু এখনো কেউ খোঁজ নেয়নি।”
লুবানা হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা মিরাজুন নাবী বলেন, “তিন দিনেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের কেউ যোগাযোগ করেনি।”
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান:
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, “দুর্ঘটনার দিনই সব হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশ পাঠানো হয়।” তবে কেন পরে হাসপাতালগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি—এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।