ত্রাণের বদলে মৃত্যু! গাজার ত্রাণকেন্দ্র রূপ নিয়েছে ইসরায়েলি ‘বধ্যভূমিতে’
প্রতিদিন নিহত হচ্ছে নিরীহ মানুষ; শিশুদের জন্য এক মুঠো খাবার জোগাড় করতে গিয়েই প্রাণ হারাচ্ছে শত শত ফিলিস্তিনি


ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে গাজা উপত্যকা। ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ দিতে হচ্ছে অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে। খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়া মানুষদের গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার বাসিন্দা ইউসেফ আল-আজুরি বলেন, “আমার সন্তানরা সারাক্ষণ ক্ষুধায় কাঁদছে। খাবার নেই, ডাল দিয়ে পেট ভরে না। ত্রাণ নিতে রাতের আঁধারে হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়। পথে পথে ওঁত পেতে থাকে স্নাইপার। কেউ কেউ জীবিত ফিরে আসে না।”
ইসরায়েল কয়েক সপ্তাহ আগে সীমিতসংখ্যক ত্রাণ ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলেও সেটিই যেন পরিণত হয়েছে গণহত্যার কৌশলে। তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে ত্রাণ দেওয়ার নামে চলছে নির্মম হত্যা। জাতিসংঘের স্বীকৃতিও নেই এই সংগঠনের।
সোমবার মাত্র একদিনেই ত্রাণ আনতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ১৩ জন। মে মাসের ২৭ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮৩ জন, আহত হয়েছেন ৪১৮৬ জনেরও বেশি।
ইসরায়েলের এক সেনা হারেৎজ পত্রিকাকে জানান, “এই ত্রাণকেন্দ্রগুলো এখন আসলে ‘কিলিং ফিল্ড’। আমাদের উচ্চপর্যায় থেকেই এমন নির্দেশ এসেছে।”
❗ শিশুদের জন্য একফোঁটা দুধও নেই
শিশুদের অবস্থা আরও করুণ। আল আকসা মার্টার্স হাসপাতালের মুখপাত্র জানান, ৬০ হাজারের বেশি শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। কোনো দুধ নেই, নেই পর্যাপ্ত খাবার। ধীরে ধীরে তারা মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে।
💣 হাসপাতাল ও জনবহুল এলাকায় বিমান হামলা
শুধু গুলি নয়, বিমান হামলার মাত্রাও দিন দিন বেড়ে চলছে। সোমবারেই ৪৮ জন নিহত হন বিমান হামলায়। উত্তর গাজার একটি সমুদ্রতীরবর্তী ক্যাফেতে চালানো এক হামলায় ২০ জন নিহত ও বহু আহত হন।
এছাড়া, মধ্য গাজার আল আকসা মার্টার্স হাসপাতালেও হামলা হয়েছে। খান ইউনিস অঞ্চলে ধ্বংস করা হচ্ছে ঘরবাড়ি।
☠️ গাজায় প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ৫৬ হাজার
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬,৫৩১ জনে, আর আহতের সংখ্যা ১,৩৩,৬৪২।
গাজার আকাশে এখনো ভেসে বেড়ায় বোমার শব্দ। ক্ষুধা, আতঙ্ক আর মৃত্যুর এই উপত্যকায় প্রতিদিন নতুন করে শুরু হয় একটি বেঁচে থাকার লড়াই।