প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাবে শর্তসাপেক্ষে একমত বিএনপি
এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না— শর্তসাপেক্ষে সংবিধানে পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি


এবিএনএ: একই ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন— এমন সাংবিধানিক বিধান অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে শর্তসাপেক্ষে সম্মত হয়েছে বিএনপি। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, “শুধু নির্বাহী ক্ষমতা কমিয়ে দিলে রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলবে— এমন ধারণা বাস্তবসম্মত নয়। অতীতে একজন ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ করেছেন বলে সার্বিকভাবে নির্বাহী ক্ষমতা খর্ব করা যৌক্তিক নয়। আমাদের মানসিকতা হতে হবে ভারসাম্য রক্ষার দিকেই।”
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, সাংবিধানিক নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি মনে করে— বিদ্যমান আইনের আওতায় সার্চ কমিটি বা কমিশন ব্যবস্থার মাধ্যমেই নিয়োগ সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে এসব প্রতিষ্ঠান যেন নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত থাকে, সেজন্য জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আইনি সংস্কার প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংবিধানে আলাদা নতুন কোনো নিয়োগ বডি গঠনের প্রয়োজন নেই। বরং বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যেই উত্তরোত্তর উন্নয়ন সম্ভব।”
বৈঠকে সংবিধানের মূলনীতিসমূহ নিয়েও বিস্তৃত আলোচনা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংযোজিত ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বাক্যগুলো সংবিধানে বহাল রাখতে চায়।
তবে শুধু ধর্মীয় মূল্যবোধই নয়, বিএনপি চায় আধুনিক রাষ্ট্রের নীতি হিসেবে গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতাকেও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে।
জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে আয়োজিত এই বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন দিক বিবেচনায় বিএনপির এমন শর্তসাপেক্ষ সহমত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
Share this content: