অবশেষে না ফেরার দেশে মাহিয়া তাসনিম, উত্তরার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ৩৩
বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হলো অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিয়ার, মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোদের অধিকাংশই শিশু


এবিএনএ: রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে, তাতে দগ্ধ হওয়া অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিয়া তাসনিম (১৫) অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, মাহিয়ার শ্বাসনালিতে গুরুতর ক্ষত ছিল এবং শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল, সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে বার্ন ইউনিটে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ জনে।
এর আগে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে একই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ১৫ বছর বয়সী মাহতাব রহমান, যার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। মাত্র তিন ঘণ্টা ব্যবধানে দুজন কিশোর প্রাণ হারাল।
মাহিয়ার পরিবার রাজধানীর উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের রাজউক প্রজেক্টের ডি-ব্লকে বসবাস করে। পাঁচ বছর আগে তার বাবা মোহাম্মদ বিশ্বাস মারা যান। মা আফরোজা খাতুন এবং ফুফু মিলে তিন কন্যাকে বড় করে তুলছিলেন। মাহিয়ার মৃত্যুর খবর এখনো তার মা জানেন না; তিনি উত্তরার নিজ বাসায় অবস্থান করছেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে এ পর্যন্ত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও শিক্ষার্থী।
দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ আরও ৫৭ জন বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউট, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)সহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
ইতিপূর্বে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
মানবিক বিপর্যয় আর অকাল মৃত্যুর এ মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা জাতি শোকাহত। মাহিয়া তাসনিমের চলে যাওয়া সেই বেদনার আরেক নতুন অধ্যায়।