রাজনীতি

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনে সরকারের বৈধতা নেই: সালাহউদ্দিন আহমদের তীব্র প্রতিবাদ

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে চুক্তিকে অগ্রহণযোগ্য বলছে বিএনপি ও ইসলামপন্থী নেতারা

এবিএনএ:  ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে বলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে এমন নীতিগত চুক্তি করা অনুচিত।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেন, “এ ধরনের স্পর্শকাতর সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ছাড়া অগ্রসর হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি এ সিদ্ধান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো ইস্যুতেও ভবিষ্যতে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।”

সালাহউদ্দিন আরো বলেন, “গাজা, আরাকান, প্যালেস্টাইনের মতো জায়গায় মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেও জাতিসংঘ সেখানে কার্যকর ভূমিকা রাখে না। অথচ বাংলাদেশে এমন একটি অফিস খোলার প্রয়োজন দেখা গেল।”

তিনি জানান, এই চুক্তির মেয়াদ তিন বছর হলেও এক বা দুই বছরের মাথায় তা পর্যালোচনা হতে পারে। পরবর্তী সরকার চুক্তি নবায়ন করবে কি না, সেটাই মূল প্রশ্ন। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে সবকিছু পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এগোনো।

এসময় তিনি জাতিসংঘের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি নিয়োগ সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, যিনি আসছেন, তাঁর সম্পর্কে কিছু আপত্তিকর তথ্য তারা পেয়েছেন। তিনি আহ্বান জানান, সরকার যেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়।

হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, “আমরা দেশের স্বার্থে কথা বলবো, জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানকে চোখ বন্ধ করে স্বাগত জানানো ঠিক হবে না। দেশ ও ইসলামবিরোধী শক্তি যেন সুযোগ না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জুর মতে, “সরকার রাজনৈতিক আলোচনায় না গিয়েই একতরফাভাবে চুক্তি করেছে। এই চুক্তির নীতিমালার বাইরে কমিশন কাজ করলে আমরা রাজপথে নামবো।”

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর অভিযোগ করেন, “পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকারকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। এই মিশন স্থাপিত হলে জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ আরও হুমকির মুখে পড়বে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজেদুর রহমান। বক্তব্য রাখেন আরও অনেকে, যার মধ্যে ছিলেন হেফাজতের নায়েবে আমির মাহফুজুল হক, সালাউদ্দিন নানুপুরী, জাতীয় ওলামা পরিষদের মহাসচিব রেজাউল করিম এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল হক প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button