এ বি এন এ : তুরস্কে গত মাসের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে ইস্তাম্বুল শহরে গণতন্ত্রের পক্ষে এক যৌথ সমাবেশে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং দুই বিরোধী দলের নেতারা। গত কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো যৌথ সমাবেশে অংশ নিলেন তারা।
অভ্যুত্থান-বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে রাতের বেলায় সমাবেশকে উৎসাহ দিয়ে আসছিল আঙ্কারা। এরই চূড়ান্ত প্রচারণা হিসেবে রোববার এই মহাসমাবেশে মিলিত হলেন দেশটির ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় নেতারা। ইস্তাম্বুলের ইয়েনিকাপি স্কয়ারে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। তাদের সবার হাতেই ছিল তুরস্কের পতাকা। শেষ বিকেলে সমাবেশে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। এই সমাবেশের নাম দেয়া হয়েছে ‘গণতন্ত্র ও শহিদ সমাবেশ’। দলীয় কোনো ব্যানার না এনে শুধু তুরস্কের পতাকা নিয়ে সমাবেশে আসার জন্য কর্মীদের আগে থেকেই নির্দেশ দিয়েছিলেন এরদোয়ান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সম্মিলনে এই সমাবেশ দেশটির জাতীয় ঐক্যকে প্রতিফলিত করেছে। সমাবেশের আগে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে এরদোয়ান বলেন, ‘সেখানে আমরা একটি জাতি হিসেবে, একটি পতাকা নিয়ে, একটি মাতৃভূমির জন্য, একটি রাষ্ট্রের জন্য, একটি একক চেতনার জন্য একসঙ্গে দাঁড়াবো।’
এই খবর লেখা পর্যন্ত সমাবেশ চলছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনাদুলু জানিয়েছে, ‘দলমত নির্বিশেষ দেশের সব স্তরের জনগণ সমাবেশে অংশ নিচ্ছে। লোকজনের সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ পুলিশ বাদেও সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আছে ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য থাকবে ৭০০ চিকিৎসাকর্মী। আছে হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্স।
এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) সূত্র জানিয়েছে, সারাদেশেই এই ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠান করা হবে। তুরস্কের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম, প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকার পিপলস পার্টির (সিএইচটি) প্রধান কেমাল কিলিসদারোগ্লু এবং আরেক বিরোধী দল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির (এমএইচপি) প্রধান দেভলেত বাহসেলি সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
তবে এতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি পিপলস ডেমোক্রেসি পার্টির (এইচডিপি) কোনো নেতাকে। তুরস্কের নিষিদ্ধ ঘোষিত দল কুর্দিস্তান ওয়ার্কাস পার্টিকে (পিকেকে) সমর্থন করার কারণে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৯৮৪ সাল থেকে পিকেকে’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এইচডিপিকে পিকেকে’র রাজনৈতিক শাখা মনে করে তুরস্ক সরকার।