বিনোদন

‘কলেজপ্রেমিকা’ থেকে অ্যাকশন হিরোইন: কেমন করে বদলে গেলেন তাসনিয়া ফারিণ?

‘ইনসাফ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে নাটকের কোমল ফারিণ হয়ে উঠলেন বাণিজ্যিক ছবির মারকাটারি নায়িকা জাহান খান। কেমন ছিল তাঁর এই রূপান্তরের গল্প?

এবিএনএ: ছোটপর্দার চেনা মুখ তাসনিয়া ফারিণ, যিনি এতদিন ছিলেন গল্পের আবেগঘন মুহূর্তে মাতানো সেই সাদামাটা প্রেমিকা, হঠাৎ করেই হয়ে উঠলেন পর্দার অ্যাকশন গার্ল। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘ইনসাফ’-এ তাঁর চরিত্র ‘জাহান খান’, শুধু গ্ল্যামার নয়, ফুটিয়ে তুলেছে কঠিন শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের এক সাহসী রূপ।

তাসনিয়ার এই রূপান্তর অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য লেগেছে। শাড়ি পরে অ্যাকশন দৃশ্যে নিজেকে মেলে ধরার পাশাপাশি আইটেম গানে নেচেছেন সাবলীলভাবে। এমন রূপে আগে কখনও দেখা যায়নি তাঁকে। নাটকের চেনা গণ্ডি পেরিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন, নারী অভিনয়শিল্পীরাও অ্যাকশনধর্মী বাণিজ্যিক সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র হতে পারেন।

ফারিণ থেকে জাহান: প্রস্তুতির গল্প

‘ইনসাফ’ সিনেমায় ফারিণের চরিত্রটি ছিল শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জিং। নিজেকে প্রস্তুত করতে নিতে হয়েছে স্টান্ট প্রশিক্ষণ, নাচের ক্লাস এবং নিয়মিত শারীরিক ট্রেনিং। ফারিণ জানান, স্ক্রিপ্ট পড়েই বুঝেছিলেন, চরিত্রটি ব্যতিক্রমী। তিনি এ চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ছিলেন এবং নিজেকে গড়েছেন পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দারের নির্দেশনায়।

ফারিণ বলেন, ‘‘জাহান চরিত্রে অভিনয় করার আগে আমাকে দিনের পর দিন ফাইট রিহার্সাল করতে হয়েছে। শুটিং চলাকালীন আহতও হয়েছি কয়েকবার। কিন্তু কখনো থামিনি। কারণ আমি জানতাম, এই চরিত্রে নিজেকে গড়তে পারলেই এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে আমার ক্যারিয়ারে।’’

পরিচালকের দৃষ্টিতে ‘জাহান’ চরিত্রে ফারিণ

পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দার শুরুর দিকে কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন—ফারিণ পারবেন তো? কিন্তু যখনই অভিনেত্রী দৃঢ় কণ্ঠে রাজি হন, পরিচালক আশ্বস্ত হন। শুটিংয়ের সময় ফারিণ যেভাবে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, তাতে সঞ্জয় রীতিমতো মুগ্ধ।

তিনি বলেন, “ফারিণ নিজে থেকে ইনিশিয়েটিভ নিয়েছে। অ্যাকশন রিহার্সাল, নাচের প্র্যাকটিস—সব কিছুই করেছে নিজের চেষ্টায়। সিনেমা হলে দর্শকের প্রতিক্রিয়া বলছে, সে পেরেছে। বিশেষ করে নারী দর্শকদের কাছে সে একদম অন্যরকমভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।”

ফারিণ কি বাণিজ্যিক সিনেমায় নিয়মিত হবেন?

প্রশ্ন উঠেছে—এই সাফল্যের পর কি ফারিণ নিয়মিত হবেন বাণিজ্যিক সিনেমায়? নাকি ফিরে যাবেন নাটক বা ওটিটিতে? উত্তরে ফারিণ বলেন, “আমি সবসময় নতুন কিছু করতে ভালোবাসি। নাটক থেকে ওটিটিতে এসেছি, ওখানে সফল হয়ে এখন সিনেমায় এসেছি। এই নতুন প্ল্যাটফর্মেও আমি নিজেকে গড়তে চাই। তবে চরিত্রে ভিন্নতা চাই।”

উপসংহার

তাসনিয়া ফারিণ প্রমাণ করেছেন, নাটকের মিষ্টি প্রেমিকা চরিত্রের বাইরেও তাঁর পরিধি অনেক বিস্তৃত। ‘ইনসাফ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে তিনি শুধু নিজের ভিন্ন রূপ নয়, বাংলা বাণিজ্যিক সিনেমার নারী চরিত্রগুলোকেও নতুনভাবে চিনিয়ে দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button