এসসিও সম্মেলনে করমর্দন ও হাসিতে শি–পুতিন–মোদির শক্ত বার্তা
চীন, রাশিয়া ও ভারতের নেতাদের আন্তরিক মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক ভূরাজনীতিতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত


এবিএনএ: বিশ্ব রাজনীতির টানাপোড়েনের সময়েই এক ভিন্ন দৃশ্য উপহার দিল সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলন। চীনের তিয়ানজিনে আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে ক্যামেরাবন্দি হলো তিন প্রভাবশালী নেতার করমর্দন ও হাসিমুখ—চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করেন পুতিন ও মোদি। দু’জন একসঙ্গে হাত ধরে ঢুকেই এগিয়ে যান শি জিনপিংয়ের দিকে। মুহূর্তেই তৈরি হয় এক আন্তরিক পরিবেশ। তিন নেতা করমর্দন করেন, হাসিমুখে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন। অনুবাদকসহ ঘিরে থাকা কর্মকর্তাদের মাঝেও তাদের উষ্ণ সম্পর্ক চোখে পড়ে। আলোচনার এক পর্যায়ে পুতিন হেসে ওঠেন, আর মোদিও অট্টহাসিতে সাড়া দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি একটি ভিডিও প্রচার করেছে যেখানে দেখা যায়, পুতিন ও মোদি যখন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। টিভি সম্প্রচারে তাকে আলাদা করে চিহ্নিত করেও দেখানো হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দৃশ্য নিছক সৌজন্য নয়, বরং তা বহন করছে বড় রাজনৈতিক বার্তা। শি-পুতিনের ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্ব রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানানো এক নতুন জোটের। আর মোদির উপস্থিতি দেখিয়েছে, ভারতও এই ভূরাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চায়।
ভারতের তক্ষশিলা ইনস্টিটিউশনের ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজের প্রধান মনোজ কেওয়ালরামানি বলেন, “কোনো সম্মেলনের ভেতরের ছোট ছোট দৃশ্য কখনো কখনো বড় বার্তা দেয়। এবারও তাই হয়েছে। হোয়াইট হাউসকে বুঝতে হবে তাদের নীতিই অন্য দেশগুলোকে বিকল্প মঞ্চে ঠেলে দিচ্ছে।”
এ সম্মেলনে ২০টির বেশি দেশ অংশ নিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধই আজ একাধিক দেশকে এক প্ল্যাটফর্মে এনেছে এবং চীন-রাশিয়ার নেতৃত্বকে আরও দৃঢ় করেছে।