বাংলাদেশ

পানি আটকে তলিয়ে যাচ্ছে ফসল, চড়া গোখাদ্যের দামে বিপাকে কৃষক

উত্তরাঞ্চলে টানা বর্ষণ ও পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়ে শত শত হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে, গোখাদ্যের দাম বেড়ে খামারিরা পড়েছেন চরম সংকটে

এবিএনএ:  উত্তরাঞ্চলে টানা বর্ষণ ও পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে পড়ায় ভয়াবহ কৃষি সংকট তৈরি হয়েছে। জয়পুরহাট, নাটোরের লালপুর ও রংপুরের মিঠাপুকুরে শত শত হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে। ধানক্ষেত, সবজির ক্ষেত, এমনকি চরাঞ্চলের গোচারণভূমিও পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এর সঙ্গে গোখাদ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

জয়পুরহাটে ফসল ডুবে বিপদে কৃষক
কালাই পৌরসভার আঁওড়া এলাকায় ৫০০ একরের বেশি আমন ধানক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকরা জানান, রোপণের কয়েক দিন পর ভারী বৃষ্টিতে পানি নামতে না পেরে জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিনের পানি নিষ্কাশনের পথ স্থানীয়ভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দ্রুত পানি নামাতে পারলে ফসল কিছুটা রক্ষা পাবে।

লালপুরে গোখাদ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে
পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধিতে চরাঞ্চলের চার হাজার বিঘা জমি ও গোচারণভূমি প্লাবিত হয়েছে। খামারিদের হাতে সংরক্ষিত খড় শেষ হয়ে যাওয়ায় বাজারে এক আঁটি ধানের খড়ের দাম বেড়ে ৬-৭ টাকা হয়েছে। বড় খড় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৯৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা দরে, যা এক মাস আগেও ছিল প্রায় সাত হাজার টাকা। গবাদিপশুর খাবারের এই সংকট কমতে অন্তত দুই মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।

মিঠাপুকুরে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে পানি প্রবাহ বন্ধের অভিযোগ
রানীপুকুর ইউনিয়নে প্রভাবশালী দুই ব্যক্তি রাস্তার পানি যাওয়ার মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় ৫০ একরের বেশি সবজি ক্ষেত ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা জানান, নিষেধ করলেও তারা পথ খুলছেন না, বরং হুমকি দিচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসন বলছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ—তিন ক্ষেত্রেই এই বর্ষণজনিত জলাবদ্ধতায় বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পানি দ্রুত না নামলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button