কারফিউ তুলে স্বাভাবিকতার পথে নেপাল: নতুন সরকারের শপথের পর জনজীবনে স্বস্তি
অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির শপথের একদিন পর কারফিউ প্রত্যাহার, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে নেপালের জনজীবন


এবিএনএ: নেপালে টানা সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর অবশেষে স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে। শনিবার কাঠমান্ডু উপত্যকা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়। রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ, খুলেছে বাজার-দোকান, আবারও জমে উঠছে স্বাভাবিক জনজীবন।
শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেলের বাসভবন শীতল নিবাসে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুশীলা কারকি। শপথের পরপরই তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির অবসানের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অনেকে হতাহত হন, যার ফলে আন্দোলন ভয়াবহ রূপ নেয়। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৫১ জন, আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি। নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য, আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষ রয়েছেন।
কে পি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর কয়েকদিনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাল সুশীলা কারকির শপথ। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, আজ থেকে চলাফেরায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।
এর ফলে কয়েকদিন পর পুনরায় চালু হয়েছে গণপরিবহন, দূরপাল্লার গাড়িও ছেড়েছে। রাস্তায় জট দেখা গেলেও জনজীবনে ফিরে এসেছে স্বস্তি। একাধিক সরকারি ভবন ও বাজার এলাকায় চলছে পরিচ্ছন্নতার কাজ, যা সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভে ভস্মীভূত হয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সহিংসতার সময় প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ বন্দি পালিয়ে যায় কারাগার থেকে। তাদের মধ্যে এক হাজার জনকে পুনরায় আটক করা গেলেও বাকিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন ঘোষণার মাধ্যমে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে নেপাল। রাজনৈতিক সহিংসতার কালো অধ্যায় পেরিয়ে দেশটি এখন অপেক্ষা করছে স্থিতিশীল ভবিষ্যতের।