আন্তর্জাতিক

কারাবন্দী ইমরান খানের স্বাস্থ্য ও দেখা করার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পাকিস্তানে উত্তেজনা চরমে

জেলে সাক্ষাৎ বন্ধ, বোনদের ওপর পুলিশের হামলার অভিযোগ—নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা

এবিএনএ: পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। তার স্বাস্থ্যের অবনতি ও মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি দেখা করার নিষেধাজ্ঞা এবং পরিবারের সদস্যদের ওপর পুলিশের হামলার অভিযোগ রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে।

ইমরান খানের তিন বোন—নুরিন খান, আলিমা খান ও উজমা খান—অভিযোগ করেছেন, তারা ভাইয়ের খোঁজ নিতে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলের সামনে গেলে পুলিশের ‘নৃশংস আচরণের’ শিকার হন। তাদের দাবি, গত তিন সপ্তাহ ধরে কাউকে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে থাকার পর হঠাৎ এলাকার স্ট্রিটলাইট নিভিয়ে অন্ধকারে পুলিশ লাঠিচার্জ চালায় এবং পিটিআই কর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা করে।

৭১ বছর বয়সী নুরিন জানান, তাকে চুল ধরে টেনে ফেলে দেওয়া হয় এবং রাস্তায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। উপস্থিত নারী সমর্থকদেরও কিল-ঘুষি ও থাপ্পড় মারা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ইমরান খানের পরিবারের দাবি, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই এই হামলা চালানো হয়েছে, যা গত কয়েক বছর ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমনে বলপ্রয়োগের ধারাবাহিক উদাহরণ। তারা পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযুক্ত সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) অভিযোগ করেছে, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ইমরান খানের সাক্ষাৎকার ও দেখা করার ওপর ‘অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা’ চলছে। তাদের মতে, ইমরান খানকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।

আইনজীবী খালিদ ইউসাফ চৌধুরী জানান, এমনকি বই ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীও ইমরান খানের কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না। তার ভাষায়, “এখানে যেন জঙ্গলের আইন চলছে—যার শক্তি আছে, শুধুই তার অধিকার।”

পিটিআইয়ের দাবি, খাইবার-পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদিও বারবার চেষ্টা করেও ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। এসব ঘটনার ফলে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও প্রকট হয়ে উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button