বাংলাদেশ

বাগেরহাটে আসন সংকোচন ঘিরে টানা হরতাল, রাস্তায় আগুন-বাঁশ, থমকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন

দ্বিতীয় দিনের হরতালে বন্ধ হয়ে গেছে বাগেরহাটের গণপরিবহন ব্যবস্থা, ক্ষতিতে ব্যবসায়ী ও যাত্রীসাধারণ, দুর্ভোগে নাকাল জনজীবন।

এবিএনএ,বাগেরহাট: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি আসন বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো জেলাব্যাপী হরতাল পালিত হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা সকাল থেকেই শহর ও গ্রামীণ সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে, বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছেন। কিছু এলাকায় বেঞ্চ পেতে বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় দূরপাল্লার সব বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

জেলা সর্বদলীয় ঐক্য কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তত ১৩০টির বেশি স্থানে স্থানীয় জনগণ ও নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। ফলে বাগেরহাট কার্যত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আন্তঃজেলা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এক প্রকার অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

পণ্য পরিবহনেও ধস:
বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, ধরাটা না সেতু, ফতেপুর বাজার ও সিএনবি মোড়ে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকে আছে। চালকরা রাস্তার পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। পচনশীল পণ্যের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘ বিলম্বে তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

দোকানপাটও বন্ধ:
হরতালের প্রতি সংহতি জানিয়ে অধিকাংশ দোকান মালিক তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। এতে স্থানীয় বাজারে কেনাকাটায় স্থবিরতা নেমে এসেছে।

রাতেও অবরোধ:
বুধবার শুরু হওয়া হরতাল রাতেও অব্যাহত ছিল। বিক্ষোভকারীরা রাতেও বিভিন্ন এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। ফলে রাতভর কোনো যানবাহন চলেনি। সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন, রাতের সড়ক অবরোধ দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আন্দোলনের পেছনের কারণ:
৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন ঘোষিত খসড়া অনুযায়ী, বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের একটি বাদ দিয়ে তিনটি রাখার পরিকল্পনা করে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাগেরহাটবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানায়। যদিও নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত গেজেট ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় এবং তাতে তিনটি আসনই বহাল রাখা হয়।

বর্তমান আসন বিন্যাস (২০২৫):

  • বাগেরহাট-১: বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, মোল্লাহাট

  • বাগেরহাট-২: ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা

  • বাগেরহাট-৩: কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা

পূর্ববর্তী বিন্যাস ছিল:

  • বাগেরহাট-১: চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাট

  • বাগেরহাট-২: বাগেরহাট সদর, কচুয়া

  • বাগেরহাট-৩: রামপাল, মোংলা

  • বাগেরহাট-৪: মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা

সর্বদলীয় কমিটির নেতারা বলছেন, এই আসন সংকোচনের সিদ্ধান্ত জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে নেওয়া হয়েছে। তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button