“বাগেরহাটে তিনদিনের আংশিক হরতাল, খোলা থাকবে দোকানপাট ও বাজার, চলবে রিকশাও”
আসন পুনর্বহালের দাবিতে তিনদিনের হরতাল কর্মসূচি, জনদুর্ভোগ এড়াতে ব্যবসা ও নিত্য প্রয়োজনীয় যানবাহন রাখা হয়েছে হরতালের বাইরে


এবিএনএ,বাগেরহাট: বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে পূর্বঘোষিত টানা তিন দিনের হরতাল কর্মসূচির পরিধি ও সময় আংশিক পরিবর্তন করে নতুন ঘোষণা দিয়েছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান কমিটির কো-কনভেনর ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম.এ সালাম।
তিনি বলেন, “জনগণের দুর্ভোগ বিবেচনা করে হরতালের সময় ও আওতা সীমিত করা হয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।”
🔔 নতুন হরতাল সময়সূচি:
-
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর): সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা
-
মঙ্গলবার ও বুধবার: সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত
হরতালের সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাজার, রিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল চলবে। তবে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক চলবে না।
সর্বদলীয় কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থানীয় ছোট সড়ক ও অভ্যন্তরীণ যান চলাচল হরতালের আওতায় পড়বে না। জরুরি সেবাদানকারী যানবাহন যেমন—অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি, বিদ্যুৎ বিভাগ, পরীক্ষার্থীদের পরিবহন ইত্যাদিও থাকবে হরতালের বাইরে।
🎤 কমিটির নেতাদের বক্তব্য:
কমিটির সদস্য সচিব শেখ মো. ইউনুস বলেন, “এই আন্দোলন জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন। তাই আমরা তাদের দুর্ভোগ চাই না।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দীপু জানান, “আমরা উচ্চ আদালতে রিট দায়েরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আশা করছি আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে এবং জনগণের দাবির প্রতি সুবিচার হবে।”
🔄 কর্মসূচির পরিবর্তন:
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় কমিটি হরতালের পাশাপাশি রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল। তবে ঘোষিত কর্মসূচির পরিবর্তে তারা ওই দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং নতুন সময়সূচি অনুযায়ী হরতাল ঘোষণা করেন।
📜 আন্দোলনের পটভূমি:
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি বাদ দিয়ে তিনটি রাখার প্রস্তাব দিলে, এলাকাজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
বাগেরহাটবাসী এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশ নেয়। এরপরও ৪ সেপ্টেম্বর কমিশন তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
🗺️ বর্তমান আসন বিন্যাস (চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী):
-
বাগেরহাট-১: বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, মোল্লাহাট
-
বাগেরহাট-২: ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা
-
বাগেরহাট-৩: কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
🗺️ আগের আসন বিন্যাস ছিল:
-
বাগেরহাট-১: চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাট
-
বাগেরহাট-২: বাগেরহাট সদর, কচুয়া
-
বাগেরহাট-৩: রামপাল, মোংলা
-
বাগেরহাট-৪: মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় জনমতের স্পষ্ট অবহেলা, এবং এর বিরুদ্ধে তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলমান থাকবে যতদিন না চারটি আসন পুনর্বহাল হয়।