ধর্ম

ধন-সম্পদ দিয়ে আল্লাহ পরীক্ষা করেন

ধন-সম্পদ আল্লাহর নেয়ামত। মহান প্রভু এর দ্বারা মানুষকে পরীক্ষা করেন। কাউকে তিনি দুনিয়াতে সম্পদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। আবার কাউকে ধন-দৌলত না দিয়ে পরীক্ষা করেন। তবে যাকে ধন-সম্পদ দান করা হয়েছে তার পরীক্ষা তুলনামূলক কঠিন। কারণ যার ধন-সম্পদ নেই তার হিসাব-নিকাশের ঝামেলা নেই। দুনিয়ার জীবন একভাবে না একভাবে কেটেই যাবে। সময় কারও জন্য বসে থাকবে না। হজরত কা’ব (রাজি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি : প্রত্যেক উম্মতের জন্যই একটি পরীক্ষার বস্তু থাকে, আমার উম্মতের পরীক্ষার বস্তু হচ্ছে অর্থ-সম্পদ (তিরমিযি)। অর্থ-সম্পদের সঠিক ব্যবহার দ্বারা মানুষ কল্যাণ ও পুণ্য অর্জন করতে পারে। আবার এর দ্বারা আল্লাহ বিমুখ ও আখিরাত থেকে উদাসীন হয়ে যায়। এ জন্যই এটাকে পরীক্ষার বস্তু বলা হয়েছে। দুনিয়াতে মানুষ যতই অর্থ-সম্পদের মালিক হোক তার সম্পদ বৃদ্ধির লোভ কখনো শেষ হয় না।  এ বিষয়ে হজরত ইবনে আব্বাস (রাজি.) সূত্রে নবী করীম (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন— আদম সন্তানের জন্য যদি সম্পদে ভরা দুটি প্রান্তরও হয়ে যায় তবুও সে তৃতীয় আরেকটি কামনা করবে। আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া অন্য কোনো কিছুই ভরতে পারে না। তবে যে আল্লাহর প্রতি অনুরাগী হয়, আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করেন (বুখারি, মুসলিম)। অর্থাৎ যে যত সম্পদের মালিক হোক সে চাইবে আরও সম্পত্তির মালিক হতে। আরও কিছুর মালিক হতে। একমাত্র কবরে যাওয়ার মাধ্যমেই তার লোভ-লালসার ইতি ঘটবে। অর্থ-সম্পদ কম থাকলে আখিরাতে হিসাবের ঝামেলাও কম হবে।  হজরত মাহমুদ ইবনে লাবিদ (রাজি.) থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম (সা.) বলেছেন— আদম সন্তান দুটি জিনিসকে অপছন্দ করে, অথচ তার জন্য এগুলো ভালো। (১) মৃত্যুকে সে অপছন্দ করে অথচ মুমিনের জন্য ফিতনার চেয়ে মৃত্যুই ভালো (২) অর্থ-সম্পদ কম হওয়া সে অপছন্দ করে, অথচ সম্পদ কম হলে আখেরাতে হিসাবও কম দিতে হবে এবং তার জন্য সহজ হবে (মুসনাদে আহমাদ)। এ জন্য রসুল (সা.) দুনিয়াবিমুখ ব্যক্তির সাহচর্য অবলম্বনের নির্দেশ দিতেন।

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

Share this content:

Back to top button