আমেরিকালিড নিউজ

চীনকে মোকাবিলায় ভারতের পাশে যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়ায় সেনা বাড়াচ্ছে

এবিএনএ : ‌লাদাখ সীমান্তে বিরোধে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল উত্তেজনা। এই সময়ে চীনের হুমকির মোকাবিলায় ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপ থেকে সিংহভাগ সেনা সরিয়ে তা এশিয়ায় মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, আপাতত জার্মানিতে মোতায়েন করা ৫২ হাজার সেনার সংখ্যা কমিয়ে ২৫ হাজার করা হচ্ছে। অর্থাৎ, ২৭ হাজার সেনা ইউরোপ থেকে এশিয়ায় নিয়ে আসা হবে।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চীনা আগ্রাসন যুক্তরাষ্ট্রকে চিন্তিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট। সম্প্রতি লাদাখের ভারত-চীন সীমান্তে দুই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা সংঘর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পম্পেও সরাসরি বলেন, ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীন সাগর, ইন্দোনেশিয়া বা ফিলিপাইনের মতো দেশে চীনের আগ্রাসী ভূমিকায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। জার্মানি থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্তের কারণও তাই। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, পরিস্থিতির বিচারে যেখানে সেনা উপস্থিতি বেশি প্রয়োজন, সেখানেই তা মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, এসব করা হবে বন্ধুদেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য আকস্মিক নয়। গত সপ্তাহেও তিনি চীনা সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছিলেন। ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ানো এবং দক্ষিণ চীন সাগরে তৎপরতা বাড়ানোর সমালোচনা করেছিলেন তিনি। চীনের শাসক কমিউনিস্ট পার্টিকে তিনি ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা দিয়েছিলেন। পম্পেও মনে করেন, ভারত সীমান্ত, হংকং বা দক্ষিণ চীন সাগর—যেখানেই চীন যা কিছু করছে, সবই সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টির সামগ্রিক ভাবনাচিন্তার প্রতিফলন।

পম্পেও একথাও জানান, গোটা বিষয়টি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্ঞাতসারে। বন্ধুদেশগুলোর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের কথা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার ব্রাসেলসে আসছেন। তারপরই আলোচনা করে যাবতীয় ভাবনাচিন্তার বাস্তবায়ন করা হবে।

১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার কথা জানায় ভারত সরকার। ওই সংঘর্ষের সময় জখম হন আরও ৭৬ জন ভারতীয় জওয়ানও। চীনের পক্ষেরও অনেক হতাহত হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চীন যেভাবে এই অঞ্চলে আরও বেশি করে সেনা মোতায়েন করছে, তাতে দুই দেশের মধ্যে শান্তি রক্ষার্থে ৬ জুন যে চুক্তি করা হয়েছিল, তা লঙ্ঘিত হয়েছে। দুই দেশের মেজর জেনারেল স্তরে হওয়া ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে থাকা চীনা ছাউনিটি সরিয়ে নেওয়া হবে; কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button