বাংলাদেশরাজনীতি

দাঁড়িপাল্লার জোয়ার বদলে দিচ্ছে রাজনৈতিক স্রোত—চট্টগ্রামে আমির ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে নতুন বার্তা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িপাল্লা প্রতীককে ঘিরে জনগণের আগ্রহ ও আস্থা বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার ভাষায়, “দীর্ঘ সময় ধরে জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা দাঁড়িপাল্লা আজ পরিবর্তিত বাংলাদেশে নতুন করে গণমানুষের আশার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।”

শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে আয়োজিত নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ভোটাধিকার থেকে বঞ্চনার অভিযোগ

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের মানুষ গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। বহু তরুণ একবারও ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়নি। তিনি সতর্ক করে বলেন,
“জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে কেউ যেন আবার সাহস না দেখায়। অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি হলে ফল ভালো হবে না।”

জুলুম, ধৈর্য ও প্রশাসনের ভূমিকা

তিনি দাবি করেন, দীর্ঘ সময় ধরে তাদের ওপর নানা অত্যাচার হয়েছে, কিন্তু ক্ষমতার বদলের পর তারা প্রতিশোধ নেওয়ার পথ বেছে নেননি। বরং জনগণকে ধৈর্য ধরতে উৎসাহ দিয়েছেন।
“প্রশাসন ভয় পেয়েছিল, আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি,”—বলেন তিনি।

গণভোট প্রসঙ্গে মন্তব্য

আগামী গণভোটকে ঘিরে তিনি বলেন, “যারা ‘হ্যাঁ’ ভোট দেবেন, তারা পুরোনো অপরিষ্কার রাজনীতি থেকে মুক্ত ভবিষ্যৎ চান। আর যারা ‘না’ বলবেন তারা সেই পুরোনো রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চায়।”

চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি

জামায়াতের আমির জানান, তারা চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ চান। অন্য অনেক রাজনৈতিক দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে লজ্জা পায় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, “ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। কেউ যেন আর জুলুমের শিকার না হয়।”

ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনার সুযোগ পেলে তাদের কোনো এমপি-মন্ত্রী সরকারি বাড়ি বা ট্যাক্সমুক্ত গাড়ি নেবেন না বলেও তিনি ঘোষণা দেন। তার ভাষায়, “বিলাসিতা কোনো জনপ্রতিনিধির চরিত্র হতে পারে না।”

ভোটের নীতি পরিবর্তনের দাবি

তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন,
“‘আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব’—এই নীতি আর চলবে না। এবার যার ভোট, সে-ই দেবে।”

বিশেষ অতিথিদের বক্তব্য

সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর জনগণ এমন একটি দেশ চায় যা স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও লুটপাটমুক্ত হবে। তিনি শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের উদাহরণ তুলে ধরে তাদের উত্তরসূরীদের বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

নগর আমীরের প্রত্যাশা

চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন,
“জনগণ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাকেই তারা বিজয়ী করবে।”

অপেক্ষাকৃত বড় উপস্থিতি

সম্মেলনে কেন্দ্রীয়, আঞ্চলিক ও জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরাও অংশ নেন এবং দলের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button