উত্তরায় চাকরির প্রলোভনে তরুণীদের পর্নো ফাঁদে ফেলছিল চক্র, উদ্ধার কলেজছাত্রী
ভালো বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে উত্তরায় আটকে রেখে পর্নো ভিডিও ধারণ, মুক্তিপণের দাবিতে পরিবারের কাছে হুমকি


এবিএনএ, ঢাকা :
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ‘বায়িং হাউসে চাকরি’ দেওয়ার প্রলোভনে তরুণীদের ফাঁদে ফেলে ভয়াবহ এক পর্নোচক্র দীর্ঘদিন ধরে অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। চাকরির আশায় বাসায় যাওয়া তরুণীদের আটকে রেখে জোর করে মাদক সেবনে বাধ্য করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করত চক্রটি। এরপর সেই ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরিবার থেকে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ।
পুলিশ জানায়, এই চক্র গত দুই বছর ধরে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে এই অপরাধ করে আসছিল। এক কলেজছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ চক্রটির সন্ধান পায়।
২৬ মে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়। পরদিন রাতে তার মায়ের ফোনে আসে মুক্তিপণের দাবি। প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে পুলিশ ২৮ মে বিকেলে উত্তরার ওই বাসা থেকে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন—মাসুম পারভেজ, সোলাইমান হোসেন, শফিকুল ইসলাম সৌরভ, মোছা. মায়া ও রুলি খানম। তাদের কাছ থেকে ৬০ পিস ইয়াবা, দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা, তিনটি মোবাইল এবং প্রায় ১ কোটি ৪১ লাখ টাকার মুক্তিপণ আদায়ের তথ্য পাওয়া গেছে।
ওসি হাফিজুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারদের মোবাইলে শতাধিক আপত্তিকর ভিডিও পাওয়া গেছে। চক্রটি শুধু ভিডিও ধারণেই থেমে থাকত না, বরং সেগুলো বিক্রি করত বিভিন্ন পর্নো সাইটে। ভুক্তভোগীদের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, চক্রের একজন নারী সদস্য বন্ধুত্বের ছলে তরুণীদের ‘ভালো বেতনের চাকরি’ দেওয়ার নাম করে বাসায় নিয়ে যেত। ইন্টারভিউর নাটক করে ছবি তোলা হতো, বলা হতো বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। পরে আবার ডেকে নিয়ে ভয়ংকর ফাঁদে ফেলা হতো তাদের।
চক্রের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়েছে। পলাতক সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে এবং গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Share this content: