উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা, নতুন এলাকা ঝুঁকিতে
গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জের নদনদীর পানি বেড়ে চলেছে, চরাঞ্চলের মানুষ আগাম বন্যার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে


এবিএনএ :
নদ-নদীর পানি বাড়ছে, বন্যার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ছে গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জে। উজানের ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে নতুন করে বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা।
গাইবান্ধা জেলার ব্রহ্মপুত্র, করতোয়া ও ঘাঘট নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই তিনটি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে থাকলেও প্রতিদিনের পানি বৃদ্ধিতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সদর উপজেলার কামারজানি ও ঘাগোয়া ইউনিয়ন এবং ফুলছড়ি উপজেলার এরান্ডাবাড়ি ও ফজলুপুরের মানুষ আশঙ্কায় রয়েছেন যে বন্যা যে কোনো সময় ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
তবে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ও হরিপুর ইউনিয়নে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন মানুষজন, কারণ তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদ ফুলছড়ি পয়েন্টে ৭৪ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদী গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার এবং করতোয়া নদী গোবিন্দগঞ্জের চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে থাকলেও পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে পারে।
অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শহর রক্ষা বাঁধ (হার্ড পয়েন্ট) এলাকায় ৭৭ সেন্টিমিটার এবং কাজীপুর এলাকায় ৮৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনার পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সিরাজগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে আগাম বন্যার শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে।
নিম্নাঞ্চলের ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল এবং অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে যমুনা নদীর পানি আরও দুই দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বর্তমানে বড় ধরনের বন্যার সম্ভাবনা কম বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
সামগ্রিকভাবে, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জের নদ-নদীর পানি পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক না হলেও, প্রতিদিনের পরিবর্তন স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে।