জাতীয়

নির্বাচনে বড় পরিবর্তন: ফেরারি আসামি অযোগ্য, বাধ্যতামূলক হলো ‘না ভোট’

আরপিও সংশোধনীতে যুগান্তকারী পরিবর্তন—ফেরারি আসামি ও মিথ্যা তথ্যদাতারা অযোগ্য, একক প্রার্থীও লড়বেন ‘না ভোট’-এর বিরুদ্ধে

এবিএনএ:  আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২-এর সংশোধনী চূড়ান্ত করেছে। সংশোধনীটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, যা অনুমোদন পেলে নতুন বিধান কার্যকর হবে।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, নতুন সংশোধনীতে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো, আদালত কর্তৃক ঘোষিত ফেরারি আসামিরা আর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। পাশাপাশি প্রার্থী যদি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেন বা তথ্য গোপন করেন, কমিশন তদন্ত সাপেক্ষে তার প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে। এমনকি নির্বাচিত হওয়ার পরও প্রমাণিত হলে সংসদ সদস্যের পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে।

এবার থেকে ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তিনি চাইলে সরাসরি ভোটগ্রহণ বন্ধ বা চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আগে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করতে হতো।

আরেকটি যুগান্তকারী পরিবর্তন হলো ‘না ভোট’ বাধ্যতামূলক করা। কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলেও তাকে সরাসরি বিজয়ী ঘোষণা করা যাবে না। প্রার্থীকে অবশ্যই ‘না ভোট’-এর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। যদি দেখা যায় ‘না ভোট’ বেশি পড়েছে, তবে পুনঃতফসিল ঘোষণা হবে।

সংশোধনীতে আরও যুক্ত হয়েছে—

  • ইভিএম পুরোপুরি বাতিল এবং পোস্টাল ব্যালট চালু। এতে প্রবাসী ভোটার, সরকারি কাজে বাইরে থাকা কর্মকর্তা, কারাগারে থাকা ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।

  • নির্বাচনি ব্যয়ের সীমা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা বা ভোটারপ্রতি ১০ টাকা (যেটি বেশি হবে)।

  • প্রার্থীর জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা

  • পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পরিবেশবান্ধব প্রচার নিশ্চিতকরণ।

  • নির্বাচনি এজেন্টকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটার হতে হবে।

  • প্রার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান বা সদস্য হলে নির্বাচন করতে পারবেন না।

এছাড়া সাংবাদিকরা এবার থেকে ভোটগণনার সময় ভোটকেন্দ্রের ভেতরে উপস্থিত থাকতে পারবেন, তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের আশা, এসব সংশোধনী নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক এবং জনগণের আস্থার উপযোগী করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button