চেয়ারম্যান অপসারণ না হলে ‘মার্চ টু এনবিআর’, অর্থ উপদেষ্টার বৈঠক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
রাজস্ব ভবনে ঐক্য পরিষদের হুঁশিয়ারি, শনিবার দেশব্যাপী শাটডাউনের ঘোষণা


এবিএনএ: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা অর্থ উপদেষ্টার বৈঠক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। একইসঙ্গে শনিবার ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে, যদি এর আগেই এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানকে অপসারণ না করা হয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর নেতারা। সংগঠনের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিয়েছিল— এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এটি বিশেষায়িত ও স্বতন্ত্র বিভাগে রূপান্তরিত হবে। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থ উপদেষ্টা এক সাক্ষাৎকারে জানান, এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ গঠনের কোনো বিকল্প নেই— যা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের শামিল।
ঐক্য পরিষদ দাবি করে, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় এনবিআর ভাঙার পরিকল্পনা এগোচ্ছে এবং অর্থ উপদেষ্টা এ নিয়ে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। তারা এই গোষ্ঠী কারা— তা তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কর ও শুল্ক ক্যাডারের প্রতিনিধিদের বৈঠকের ঘোষণা এলেও, ঐক্য পরিষদ জানায়, তাদের কাছে কোনো অফিসিয়াল আমন্ত্রণ পৌঁছেনি। তাছাড়া চেয়ারম্যান অপসারণ না হলে তারা আলোচনায় বসবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালিত হবে এবং এরপর ‘মার্চ টু এনবিআর’-এর মাধ্যমে কর্মকর্তারা রাজস্ব ভবনে জমায়েত হবেন।
সংগঠনটি অভিযোগ করে, বর্তমান চেয়ারম্যান সরকারের দমন-পীড়নমূলক নীতির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করছেন। তার অপসারণই হবে রাজস্ব সংস্কারের সূচনা। তাই বৃহস্পতিবারও দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি কার্যক্রম এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্দোলনের কারণে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলি বা অবসরের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করা হবে।
এর আগে ২১ জুন দ্বিতীয় দফায় কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান ও কলম বিরতি চলেছিল। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি পেয়ে তখন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তবে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ও তাকে অসহযোগিতার সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
২০ জুন এনবিআর গঠনগত সংস্কারে ছয় সদস্যের সমন্বয় কমিটি গঠিত হলেও ঐক্য পরিষদ অভিযোগ করে, তাদের কাউকে না রেখে বিতর্কিত সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।
Share this content: