“বিদেশি পরামর্শক এনে সংস্কার হয় না, দেশ চালানো যায় না”— কড়া মন্তব্য মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েকটি বৈঠক আর বিদেশি পরামর্শে রাষ্ট্র সংস্কার অসম্ভব, জনগণের সম্পৃক্ততাই হতে হবে মূল ভিত্তি


এবিএনএ: বিদেশ থেকে কিছু বিশেষজ্ঞ বা পরামর্শক এনে রাষ্ট্র পরিচালনার চিন্তা সম্পূর্ণ অকার্যকর— এমন কড়া মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জিয়া পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন,
“কয়েকজন ব্যক্তি কিছু বৈঠক করে রাষ্ট্র সংস্কার করে ফেলবে— এটা অবাস্তব চিন্তা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়।”
আলোচনায় তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাম্প্রতিক উদ্যোগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ফখরুল বলেন,
“একটা কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে মৌলিক সংস্কার করে দেবে— এটা ভাবার সুযোগ নেই। রাষ্ট্র গঠনে বাস্তব কাঠামো দরকার, শুধু পরিকল্পনা দিয়ে কিছুই হবে না।”
তিনি আরও বলেন,
“বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখনো সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের ধারণা বোঝে না। তারা জানে—একজন প্রার্থী, একটি প্রতীক। তাদের জন্য প্রয়োজন মাঠপর্যায়ে নেতৃত্ব, প্রার্থীর ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা। এই বাস্তবতা বিবেচনায় না এনে নির্বাচন ব্যবস্থা পরিবর্তনের কথা বলা অর্থহীন।”
আলোচনার এক পর্যায়ে ফখরুল আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“আমলাতন্ত্র এখন উন্নয়নের বড় প্রতিবন্ধক। নেগেটিভ بيرোক্রেসিকে পজিটিভ ব্যুরোক্রেসিতে রূপান্তর করতে হলে সময়োপযোগী সংস্কার দরকার।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“সংস্কার রাতারাতি হয় না, গঠনতান্ত্রিক কাঠামো এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে স্বাভাবিকভাবে দুর্নীতি বা অনিয়ম না হয়।”
মির্জা ফখরুল মনে করেন, বর্তমানে বাংলাদেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
“জাতি এক ভয়াবহ রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে আছে। একদিকে গণতন্ত্রের ঘাটতি, অন্যদিকে অর্থনৈতিক দুর্দশা—এই দুই থেকে জাতিকে বের করে আনতে হবে। আওয়ামী লীগ যা ক্ষতি করেছে, তা পুষিয়ে নিতে সময় ও কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার।”
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, মজিবুর রহমান হাওলাদার, আবদুল্লাহ হিল মাসুদসহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।