খামেনিকে হত্যার হুমকিতে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রকে একহাত নিল ইরানের সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতারা
হত্যার হুমকিকে ‘আধ্যাত্মিক মূল্যবোধে আঘাত’ আখ্যা দিয়ে ইরানের ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর নিন্দা


এবিএনএ: ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক আচরণকে ‘আন্তর্জাতিক আইন ও ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ’ বলে উল্লেখ করেছেন ইহুদি, খ্রিস্টান, জোরোঅ্যাস্ট্রিয়ান এবং মান্দায়ান ধর্মের শীর্ষ নেতারা।
শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে, তাঁরা এই হুমকিকে শুধু একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়, বরং বিশ্বব্যাপী ধর্মপ্রাণ মানুষের ভাবাবেগ ও বিশ্বাসের ওপর গুরুতর আঘাত বলেও অভিহিত করেছেন।
📢 যা বলা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে:
বিবৃতিতে বলা হয়—
“ঐশ্বরিক ধর্মের নেতারা তাদের অনুসারীদের বিশ্বাসের প্রতীক। তাদের বিরুদ্ধে হুমকি মানে কোটি কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত।”
তারা সতর্ক করে দেন, এ ধরনের হুমকি জাতিসংঘের চার্টার ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ধর্মীয় নেতৃত্বদের কাছ থেকে প্রকাশ্য এবং কার্যকর জবাবদিহি দাবি করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই হুমকিগুলো মধ্যপ্রাচ্য ও বাইরের অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা এবং অনিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।”
⚖️ আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ:
ধর্মীয় নেতারা বলেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার যে বিধান রয়েছে, তা এই হুমকির মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারা জোর দিয়ে বলেন, যদি এই হুমকি বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে প্রতিহত করা হবে।
🔥 হুমকির প্রেক্ষাপট:
সম্প্রতি ইসরায়েল ইরানের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামের সামরিক অভিযান চালায় ইসরায়েলি স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে।
এর ঠিক পরেই খামেনিকে হত্যার হুমকি আসে, যা নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে।
✍️ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী নেতারা হলেন:
-
বিশপ নার্সাই বেঞ্জামিন – আসিরিয়ান চার্চ অব দ্য ইস্ট, ইরান
-
বিশপ ভারোশ আভাঞ্জিয়ান – আর্মেনিয়ান ক্যালিফেট কাউন্সিল, তেহরান
-
রাব্বি ইউনেস হামামি লালেহজার – ইরানের ইহুদি সম্প্রদায়
-
মোবাদ মেহেরবান পোলাদি – জোরোঅ্যাস্ট্রিয়ান অ্যাসোসিয়েশন
-
গানজোরা নেজাত চাহিলি – মান্দায়ান ধর্মের নেতা
এই ঘটনা শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, গোটা বিশ্বে ধর্মীয় সহনশীলতা ও রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মহলের উচিত দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এ ধরনের হুমকি ও উত্তেজনা প্রশমিত করা।
Share this content: