তত্ত্বাবধায়ক প্রধান নিয়োগে র্যাংক চয়েজ পদ্ধতির নতুন প্রস্তাব দিল ঐকমত্য কমিশন
সংসদ ভেঙে গেলে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে র্যাংক চয়েজে হবে প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন, জুলাই সনদে চূড়ান্ত ফর্মুলা যোগের সম্ভাবনা


এবিএনএ: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে নতুন একটি পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ‘র্যাংক চয়েজ’ বা পছন্দক্রমভিত্তিক ভোটের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাকে বাছাই করার এই প্রস্তাব দেওয়া হয় রবিবার অনুষ্ঠিত সংলাপের ১১তম দিনে।
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানান, এর আগের সংলাপে দুটি বিকল্প প্রস্তাব ছিল। আজ তা সংশোধন করে এই নতুন পদ্ধতির রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সোমবারের মধ্যে মতামত দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি আশাবাদী, আলোচনা শেষে চলতি জুলাই মাসেই ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন: নতুন কাঠামো কী বলছে?
নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে কিংবা অন্য কোনো পরিস্থিতিতে ভেঙে গেলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে, সাত সদস্যের কমিটি গঠিত হবে— যেখানে থাকবেন:
-
প্রধানমন্ত্রী
-
স্পিকার
-
সংসদ উপনেতা বা চিফ হুইপ
-
বিরোধীদলীয় নেতা
-
বিরোধীদলীয় উপনেতা বা ডেপুটি স্পিকার
-
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ
-
তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি
যদি সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়, তাহলে উপরের তালিকার সঙ্গে যুক্ত হবেন:
-
উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান
-
বিরোধীদলীয় ডেপুটি চেয়ারম্যান
-
উচ্চকক্ষের নেতা ও বিরোধীদলীয় নেতা
-
রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য
-
অন্যান্য বিরোধী দলের প্রতিনিধি
কমিটি যদি সর্বসম্মতভাবে একজনকে নির্ধারণ করতে পারে, রাষ্ট্রপতি তাকেই প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবেন। অন্যথায়, জোটগুলোর পক্ষ থেকে মনোনীত মোট ১৪ জনের মধ্যে শুনানি ও ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত নির্বাচন হবে।
নির্বাচন পদ্ধতি: র্যাংক চয়েজ
সরকারি দল ও প্রধান বিরোধীদল প্রত্যেকে পাঁচজন করে ১০ জনের নাম দেবে। তৃতীয় বৃহত্তম দল দুইজন করে চারজনের নাম দেবে।
এই ১৪ প্রার্থীর নাম নিয়ে সংসদে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর—
-
সরকার বিরোধীদলের তালিকা থেকে ১ জন বাছাই করবে
-
বিরোধীদল সরকারের তালিকা থেকে ১ জন বেছে নেবে
-
উভয়পক্ষ তৃতীয় বৃহত্তম দলের তালিকা থেকে ১ জন করে বাছাই করবে
-
তৃতীয় বৃহত্তম দল সরকারের-বিরোধীদলের তালিকা থেকে ১ জন বেছে নেবে
ফলাফলে থাকবে ৫ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা। এই ৫ জনের মধ্য থেকে কমিটির সদস্যরা র্যাংক চয়েজ পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে যার সর্বোচ্চ র্যাংকিং থাকবে, তাকেই নিয়োগ দেওয়া হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে।