জাতীয়

রেকর্ড খাদ্যশস্য আমদানি সত্ত্বেও ঝুঁকিতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা

চাহিদা পূরণে আমদানি দ্বিগুণ, তবুও বৈশ্বিক প্রতিবেদনে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় চতুর্থ স্থানে বাংলাদেশ

এবিএনএ:  দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড প্রায় ১৩ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করেছে সরকার। চলতি অর্থবছরেও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমলেও খাদ্য আমদানির ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এর কারণ হিসেবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহসহ প্রধান ধান উৎপাদন অঞ্চলে টানা চার দফা বৃষ্টিতে উৎপাদন হ্রাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সরকার বর্তমানে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২১ লাখ ৭৯ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত রেখেছে। খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানান, ১৭ আগস্ট থেকে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হবে, যেখানে এবার ৫ লাখ নতুন পরিবার যুক্ত হয়ে মোট সুবিধাভোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৫ লাখে।

তবে ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৫’-এ দেখা যাচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের একটি বাংলাদেশ, অবস্থান চতুর্থ। জাতিসংঘের পাঁচটি সংস্থার যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু খাদ্যের অভাব নয়, স্বাস্থ্যকর খাবারের দিক থেকেও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। এখনও দেশের প্রায় ৭ কোটি ৭১ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পান না, আর ১০ শতাংশের বেশি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে।

সরকারি তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫.৭২ লাখ টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬.৮৩ লাখ টন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬.৩৩ লাখ টন খাদ্য আমদানি হয়েছিল। অথচ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ—১২ লাখ ৯৬ হাজার টন।

অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খাদ্য সংকট বৈশ্বিক বিষয় এবং এর ওপর প্রভাব বিস্তার করে বড় অর্থনীতির দেশগুলো। অন্যদিকে ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের মতে, দৃশ্যমান ক্ষুধা না থাকলেও দেশে “চাপা ক্ষুধা” বিদ্যমান, যা মানুষের জীবনযাপনের ধরণ পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ৫৩টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ২৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষ বর্তমানে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে, যেখানে নাইজেরিয়া, সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়া শীর্ষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button