শিক্ষা

মজার গণিত

এ বি এন এ : সাধারণ গুণ-ভাগ দিয়ে অনেক সময় গণিতের জটিল সমস্যার তাক লাগানো সমাধান দেওয়া যায়। যেমন ধরা যাক, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্জন হলের সেই পুরোনো দিনের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন। তাঁদের কেউ পরিসংখ্যান, কেউ গণিত বা কেউ পদার্থবিজ্ঞানে পাস করে পিএইচডি, পোস্ট ডক্টরাল করে এসেছেন। কেউ অধ্যাপক, কেউ বিজ্ঞানী। মাঝেমধ্যে কার্জন হল প্রাঙ্গণে বিজ্ঞানের মজার বিষয় নিয়ে আলোচনার আসর বসান। এটা একধরনের বিজ্ঞানের আড্ডা বলা চলে। সেখানে আপনি বন্ধুকে বললেন, এই যে আমি কয়েকটা অঙ্ক বলছি, তোমরা লিখে রাখতে পারো।
বন্ধুরা বললেন, লিখে লাভ?

– লাভ আছে। দেখো না, তোমরা তোমাদের পছন্দের কোনো অঙ্ক নিয়ে আমার কথামতো গুণ-ভাগ করে উত্তর মিলয়ে নেবে। প্রথম অঙ্কটা কিন্তু তোমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী হবে, আমি জানবও না, জানতে চাইবও না।

– বেশ, আমরা একটা অঙ্ক ধরলাম।

– আরে দাঁড়াও দাঁড়াও। একটু সবুর করো। আমার কথা তো শেষ হয়নি এখনো। প্রথমে তোমরা যার যার কাগজে ১, ২, ৪, ৫, ৭, ৮—এ কয়টি অঙ্ক লিখে রাখো। লক্ষ করলে দেখবে, এদের মধ্যে একটা ছন্দ আছে। যেমন ১-এর পর ২, এরপর ৩ বাদ দিয়ে ৪ ও ৫। এরপর আবার ৬ বাদ দিয়ে ৭ ও ৮। ছন্দটা মনে রাখলে তোমরা যেকোনো অনুষ্ঠানে সহজে গণিতের এই চমকপ্রদ খেলাটা দেখাতে পারবে।

লিখেছ তো? এবার তোমারা তোমাদের যার যার পছন্দ অনুযায়ী ১ থেকে ৬-এর মধ্যে যেকোনো একটি অঙ্ক বেছে নাও। আমি জানতে চাইব না। ওটা গোপন।
এবার ক্যালকুলেটর নিয়ে কিছু হিসাব করো। প্রথমে তোমরা যে সংখ্যাটি বেছে নিয়েছ, তাকে ৯ দিয়ে গুণ করো।
– বেশ করলাম, তারপর?
– গুণফলকে আবার গুণ করো ১১১ দিয়ে।
– বেশ করলাম।
– ফলাফল কি বড় হয়ে যাচ্ছে? হোক বড়। এবার প্রাপ্ত ফলাফলকে আরেকবার গুণ কর ১০০১ দিয়ে।
– আরে ভাই, আর কত গুণ করাবে, এ তো গাধার খাটনি খাটাচ্ছ!
– না, না ভাই, এই তো শেষ। এবার গুণফলকে ৭ দিয়ে ভাগ করো।
– বেশ করলাম। তো কী হলো?
– দেখো তো তোমরা ফলাফল কী পেয়েছ? আমি যে প্রথম ৬টি অঙ্ক লিখতে বলেছিলাম, তার সঙ্গে কোনো মিল পাচ্ছ কি?
বন্ধুরা কিছুক্ষণ চোখ বুলিয়ে সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল, আরে তাই তো, ফলাফলে তো তোমার ৬টি অঙ্কের সব কটিই আছে!
এখানেই এই জটিল গণিতের মজা। ১ থেকে ৬ পর্যন্ত যেকোনো একটি অঙ্ক নিয়ে তাকে ক্রমান্বয়ে ৯, ১১১ ও ১০০১ দিয়ে গুণ করে ৭ দিয়ে ভাগ করলে ৬ অঙ্কের একটি সংখ্যা পাওয়া যাবে, যার মধ্যে ১, ২, ৪, ৫, ৭ ও ৮ অঙ্কগুলোই শুধু থাকবে, হয়তো এই ক্রমিকে নয়, উল্টাপাল্টা ধারায়। আপনি এখনই পরীক্ষা করে দেখুন না, খুব সোজা।
আপনাদের যাঁরা গণিতে উৎসাহী, তাঁরা একটু চিন্তা করে বের করুন তো কেন সব সময় একই উত্তর পাওয়া যায়? যদি এর যৌক্তিক ব্যাখ্যা কোনো উৎসাহী তরুণ বের করতে পারেন, তাহলে তিনি নির্ঘাত আগামী বছর ডাচ-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ও প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। এবং নিশ্চয়ই তিনি দেশের জন্য স্বর্ণপদক জয় করে আনবেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button