ধর্ম

কোরবানির আগে-পরে কি করবেন, কি করবেন না

এ বি এন এ : মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহার বেশি দেরি নেই। এরই মধ্যে কোরবানির পশু কেনা নিয়ে প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। মিডিয়াতেও তার পূর্বাভাস মিলছে। কোরবানি দাতার জন্য রয়েছে ইসলামের বিশেষ কিছু নির্দেশনা। রয়েছে কোরবানির জন্য পশু কেনা, কোরবানি করা ও কোরবানির পর করণীয় নানা বিষয়। এসব নিয়েই থাকছে বিশেষ পরামর্শ।

কোরবানির পশু ক্রয়ের পূর্বে
হালাল উপার্জন দিয়ে কোরবানির পশু ক্রয় করুন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের স্পৃহা এবং ওয়াজিব আদায়ের প্রেরণা মনে জাগ্রত করুন।
কোরবানিকে সুখ্যাতি ও প্রদর্শনেচ্ছার চিন্তা মন থেকে দূর করুন।
ভাগে কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে পশু ক্রয়ের পূর্বেই ভাগিদার নির্বাচিত করুন। এটা মোস্তাহাব আমল।
যার ব্যাপারে নিশ্চিত জানা আছে যে, তার উপার্জন হারাম- তাকে কোর‍বানির শরিক করবেন না।
কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা করলে, জিলহজ মাসের চাঁদ উঠারা পূর্বেই নখ, চুল এবং অবাঞ্চিত পশম কেটে ফেলুন। এটাও মোস্তাহাব আমল।

পশু ক্রয়ের সময়
যে পশুর ব্যাপারে ধারণা হবে যে, তা চুরি করে আনা- তা ক্রয় করবেন না।
কোরবানি পশু ক্রয়-বিক্রয়কালে মিথ্যা কথা ও মিথ্যা শপথ বর্জন করুন। এমনিতেও মিথ্যা বলা হারাম।
কোনো পশুর মূল্য চূড়ান্ত করার পর কোনো দাম বলবেন না অথবা ক্রয়ের প্রস্তাব দেবেন না। এটা মাকরূহ।
ক্রয়কৃত পশুটি ভালোভাবে দেখে নিন।
গরু, মহিষের বয়স যেন দুই বছরের কম না হয়, উটের বয়স যেন পাঁচ বছরের কম না হয়, ছাগলের বয়স যেন এক বছরের কম না হয়। ছয় মাস বা তদূর্ধ্ব বয়সের ভেড়া, দুম্বা দেখতে যদি এক বছর বয়সের মতো মনে হয় তবে তা দ্বারা কোরবানি করা যাবে। গরু, মহিষ, উট ও ছাগলের জন্য বয়সের কোনো ছাড় নেই। যতই হৃষ্ট-পুষ্ট হোক নির্ধারিত বয়স পূর্ণ হতে হবে।
কান, জিহ্বা ও লেজ যেন অর্ধেকের বেশি কাটা না থাকে। চোখের দৃষ্টি শক্তি অর্ধের্কের বেশি যেন নষ্ট না থাকে।
শিং যেন এ পরিমাণ ভাঙা না থাকে যার প্রভাব মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
জানা সত্ত্বেও প্রসব সময় নিকটবর্তী এমন পশু ক্রয় করে কোরবানি করা মাকরূহ। তবে কোরবানি আদায় হবে।
বন্ধ্যা পশুর কোরবানি জায়েজ। অণ্ডকোষ কাটা পশু কোরবানি করা উত্তম।
খাবার খেতে পারে না বা নড়া-চড়া করতে পারে না এত দুর্বল পশুর কোরবানি শুদ্ধ নয়।
বন্য ও হিজড়া প্রজাতির পশুর কোরবানি জায়েজ নেই।

কোরবানির পশু ক্রয়ের পর করণীয়
পশুর সেবা-যত্ন করুন। অহেতুক পশুকে কোনো কষ্ট দেবেন না।
পশু এমন স্থানে বাঁধুন- যেন পথচারীদের কষ্ট না হয়। পশুর গলায় ঘণ্টি বাঁধবেন না।
কোরবানির জন্য ক্রয়কৃত পশুর ওপর আরোহণ করবেন না বা কোনো কাজে ব্যবহার করবেন না।
যদি দুধ দোহন করা হয় তবে গরিব-মিসকিনকে দান করে দিন। আবার দুধের বাজার মূল্য দান করে নিজেও সে দুধ পান করতে পারবেন।
কোনো অবস্থাতেই কোরবানির পশুর প্রদর্শনী করবেন না।
ভাগে কোরবানি দিলে ভাগিদার সবাইকে সবকাজে সঙ্গে রাখার চেষ্টা করুন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button