বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

ড. কামালের দুঃখ প্রকাশ

এবিএনএ: শহীদ বুদ্ধজীবী দিবসে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেজাজ হারিয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্য কোনোভাবে কাউকে আহত বা বিব্রত করে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মহান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবনে অসামান্য তাৎপর্যপূর্ণ। আমি প্রত্যেক বছরের মতো এবারও শহীদ বুদ্ধজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিরপুর স্মৃতিসৌধে গিয়েছি। এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধুও আছেন।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭২-৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রণীত আইনগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারা আমার কাছে সর্বদাই আবেগ অনুভূতির বিষয়। আমি বিশ্বাস করি, সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শুধুই শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য যান। ১৪ ডিসেম্বর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্মৃতিসৌধের বেদিতে দাঁড়িয়ে আমি বলেছিলাম, আমরা কত মেধাবী সন্তানদের হারিয়ে তবে স্বাধীনতা পেয়েছি।’

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেজাজ হারানোর ঘটনা বর্ণনা করে কামাল হোসেন বলেন, ‘তখন হঠাৎ করে বেদিতেই আমার কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলো। আমি তাৎক্ষণিক সবিনয়ে বলি, আজকের এই দিনে, যেখানে আমাদের গভীর অনুভূতির বিষয়, এই বিষয়ে এখানে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। পুনরায় একই প্রশ্ন তুললে আমি একই মনোভাব ব্যক্ত করি।’ ‘কিন্তু তৃতীয়বার ভিড়ের মধ্যে থেকে কোথাও অনবরত দুই থেকে তিনবার আমি শুধু ‘জামায়াত জামায়াত’ শুনতে পাই। তখন আমার খুবই খারাপ লেগেছে। এ বিষয়ে আমি প্রশ্নকর্তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমার বক্তব্য কোনোভাবে কাউকে আহত বা বিব্রত করে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

ড. কামাল বিবৃতিতে আরো বলেন, ‘সকলে অবগত আছেন যে, আমি সারা জীবন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামিল থেকেছি। আশা করি, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানগণ তাদের জীবনের বিনিময়ে যে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছেন, তা আমরা সকলে মিলে গড়তে সক্ষম হব।’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুরে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বের হয়ে আসলে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তারা। এ সময় কামাল হোসেনের কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘জামায়াতের তো রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, এখন জামায়াত সম্পর্কে আপনাদের সর্বশেষ অবস্থান কী?’ এর আগে একই ধরনের প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এই দিনে শহীদ বেদিতে এসে এসব বিষয়ে কোনো কথা তিনি বলবেন না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাকে আবারো এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেজাজ হারান ড. কামাল। ওই সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘কত টাকা পেয়েছ এই প্রশ্নগুলো করার জন্য? শহীদ মিনারে এসেছ, শহীদদের কথা চিন্তা করা উচিত। কোন চ্যানেল থেকে এসেছ?’

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button