এবিএনএ : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আবাসিকখাতে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার না করা হলে শিল্পে ব্যবহার বাড়ানো যাবে। কর্মসংস্থানসহ বহুমুখি সুবিধা অর্জন করা সম্ভব হবে। তাই বাসাবাড়িতে এলপিজির ব্যবহার বৃদ্ধির বিকল্প নেই। দেশের ৭০ ভাগ আবাসিক জ্বালানির চাহিদা এলপিজি থেকে পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে এলপি গ্যাসের দাম নিয়ে যে তারতম্য রয়েছে তা দূর করা হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এলপি গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণের উদ্যাগ নেয়া হবে। এ সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি হচ্ছে।
রবিবার রাজধানীতে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চতুর্থ এশিয়া এলপিজি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন আগামীকাল সোমবার শেষ হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলপিজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ভরযোগ্য নিরাপদ জ্বালানি হতে পারে এলপিজি। পরিবেশ বান্ধব ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে এটি জনপ্রিয়। প্রয়োজন শুধু যথার্থ বিপণন ব্যবস্থা ও মূল্য নির্ধারণী নীতিমালা। অটোগ্যাস হিসেবে এর ব্যবহার এবং বাজার জরিপ করতে হবে।
নসরুল হামিদ বলেন, বাসাবাড়ি ও পরিবহন খাতে ব্যবহার করা গ্যাসের ২০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা যদি এলপিজি ব্যবহার করি তাহলে ২০ শতাংশ সাশ্রয় হবে। তাই বর্তমান সরকার বাসাবাড়ি ও পরিবহন খাতে এলপিজিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তিনি বলেন, অর্থনীতি দিন দিন বড় হচ্ছে, সেক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। তাই কলকারখানা এবং বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্র ছাড়া অন্য সব খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে এলপিজির ব্যবহার বাড়ানো হবে। দেশের ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই এখন আমাদের বিকল্প জ্বালানির কথা ভাবতে হবে। এলপিজি উত্পাদনে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড এলপিজি এসোসিয়েশনের পরিচালক ডেভিট টেইলার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বৈশ্বিকভাবে এলপিজির ব্যবহার, উত্পাদন, পরিবহণ ও বাজার মূল্যায়ন ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় এলপিজি‘র জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে এ জ্বালানির সম্ভাবনাময় ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে।
অনুষ্ঠানে এলপিজি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নাম ঘোষনা করা হয়। তিনি বলেন, দেশে খুব অল্প প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ আছে। গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সরকার বাসাবাড়ি ও পরিবহন খাতে পাইপে গ্যাস ব্যবহারকারীদের নিরুত্সাহিত করছে। বাংলাদেশে এলপিজি‘র ভবিষ্যত্ বাজার খুবই সম্ভাবনাময়। বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারে সরকারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে এলপিজি‘র ব্যবহার বাড়ানো উচিত।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং কনভারসন ওয়ার্কস ওনার্স এসোসিয়েশনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রিয়াদ আলী, ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড’র সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানজীম চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান।