এ বি এন এ : সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে এই সহায়তার কথা জানিয়েছেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় তথ্য আদান-প্রদানের কথাও বলেছেন তিনি।
নিশা দেশাই বিসওয়াল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান। ইহসানুল করিম বলেন, সাম্প্রতিক গুপ্ত হত্যার বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য নিজেদের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেন, এ বিষয়ে তাদের বিশেষজ্ঞ রয়েছে। একই সঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবেলায় অভিজ্ঞতা ও কারগরি সহায়তা দেয়ার কথাও বলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইহসানুল করিম আরো বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় বেটার আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বৈঠকে, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ওপরো গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
আমেরিকান দূতাবসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশে সরকারের নেয়া পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন নিশা দিশাই। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নিশা দেশাই বিসওয়াল।
ইউএসআইডি’র কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নানসহ সাম্প্রতিক সময়ে মসজিদের ইমাম, চার্চের পাদ্রীসহ সাম্প্রতিক সময়ে এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে ‘সফট টার্গেট’ হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সেনসেটাইজেশন’ করতেই ঠাণ্ডা মাথায় এই সব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের জন্য বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেছেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চরমপন্থা মোকাবলোয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিশাল অভিজ্ঞতা ও ত্যাগ রয়েছে।
সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আগাম কোনো তথ্য থাকলে তা দিয়ে বাংলাদেশকে সহায়তার কথাও এসময় বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্সের’ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরাধীরা অপরাধী এবং সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসীই। তাদের কোনো ধর্ম নেই।
অতীতে অন্য দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হলেও তার সরকার তা বন্ধ করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র চরমপন্থাকে মদদ দিয়েছিল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেসময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সন্ত্রাসীদের সহায়তা করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
এসময়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের রক্ষায় জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ইনডেমনিটি আইন পাশ, ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সহিংসতা এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের প্রতি ধন্যবাদও জানান।
সাক্ষাতকালে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিক্যাট উপস্থিত ছিলেন।