এবিএনএ : বরিশাল বুলসকে হারিয়ে আবারও খুলনা টাইটানসকে টপকে শীর্ষে উঠে গেল ঢাকা ডায়নামাইটস। রবিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে মুশফিকের বরিশালকে ৪ উইকেটে হারায় সাকিব-নাসিররা। এ জয়ের ফলে ৯ ম্যাচে ৬ জয়ে তাদের পয়েন্ট ১২। অন্যদিকে, সমান সংখ্যাক ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেলেও নেট রান রেটে পিছিয়ে তালিকায় দুইয়ে অবস্থান করছে মাহমুদুল্লাহর খুলনা টাইটানস। এদিন দুপুরে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩২ রান। জবাবে ১৯.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ঢাকা। বরিশালের হয়ে ব্যাটিংয়ের উদ্বোধন করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বিদায় নেন শাহরিয়ার নাফিস। ১৩ বলে মাত্র ৩ রান করা বরিশালের এই ওপেনারকে ফেরান আবু জায়েদ। এরপর ১৫ রান যোগ হতেই রান আউটের শিকার আরেক ওপেনার মুনাবেরা। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে আবারও রান আউট। এবার ডাবল রান নিতে গিয়ে মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ফিরতে হয় ১৩ বলে ৭ রান করা জীবন মেন্ডিসকে। দলীয় ৩৭ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বরিশাল। এরপর জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম এবং নাদিফ চৌধুরি। বরিশালের দলপতি মুশফিকুর ঢাকার দলপতি সাকিবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ৩৬ রান। ১৪তম ওভারে মুশফিক বিদায় নেওয়ার আগে ৩০ বল মোকাবেলা করে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান। দলীয় ৮৪ রানের মাথায় বরিশাল তাদের চতুর্থ উইকেট হারায়। এরপর বরিশালের রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন নাদিফ চৌধুরি। তবে, ইনিংসের ১৬তম ওভারে রবি বোপারার বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি সীমানায় সেকুজে প্রসন্নর দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিরতে হয় নাদিফকে। আউট হওয়ার আগে নাদিফ ২৫ বলে করেন ২১ রান। দলীয় ৯১ রানের মাথায় টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারায় বরিশাল। ১৭তম ওভারে ব্রাভোর বলে ফেরেন এনামুল হক (৩)। সাঞ্জামুলের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন তিনি। দলীয় ৯৮ রানের মাথায় ছয় উইকেট হারায় বরিশাল। শেষ দিকে ব্যাট চালিয়ে থিসারা পেরেরা ১৫ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান রুম্মন রইস ১৩ বলে ২৫ রান করে মাঠ ছাড়েন। ১৩৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ঢাকার হয়ে ওপেন করতে নামেন কুমার সাঙ্গাকারা ও মেহেদি হাসান মারুফ। তবে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে বরিশাল বুলসের স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এক রান করা মারুফ। ইনিংসের নবম ওভারে বিদায় নেন সাঙ্গাকারা। তাইজুলের দ্বিতীয় শিকারে বিদায় নেওয়ার আগে লঙ্কান এই গ্রেটের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। থিসারা পেরেরার তালুবন্দি হওয়ার আগে সাঙ্গাকারা ৩৩ বলে চারটি বাউন্ডারি হাঁকান। দলীয় ৫৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ঢাকা। দশম ওভারে সাকিবকে বিদায় করেন এনামুল হক। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন তিনি। ২১ বলে দুটি চারের সাহায্যে ২২ রান করে বিদায় নেন সাকিব। ঢাকার দলপতির বিদায়ে দলীয় ৫৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় দলটি। এরপর ৫৫ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান নাসির হোসেন এবং মোসাদ্দেক হোসেন। দলীয় ১১৩ রানের মাথায় বিদায় নেন নাসির হোসেন। মনির হোসেনের বলে এলবির ফাঁদে পড়ার আগে নাসির ২৯ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৩৪ রান। ১৯তম ওভারে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়ে আউট হন মোসাদ্দেক। তার ২০ বলের ইনিংসে ২টি চারের সাহায্যে আসে ২৩ রান। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে মেন্ডিসের তালুবন্দি হন মোসাদ্দেক। একই ওভারে রান আউট হয়ে ফেরেন ৮ বলে ১০ রান করা সেকুজে প্রসন্ন। ১২৯ রানের মাথায় ঢাকার ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। শেষ ওভারে ঢাকার প্রয়োজন ছিল মাত্র ৪ চার। উইকেটে ছিলেন রবি বোপারা আর ব্রাভো। প্রথম বলে দুই রান নেন ব্রাভো। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৪ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে ঢাকা। হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলো না মুশফিকের বরিশাল। আগের চার ম্যাচে টানা হারের পর রোববার দিনের প্রথম ম্যাচে সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছেও ৪ উইকেটে হেরে গেলো তারা। আর মুশফিকের হারিয়ে আবারো খুলনাকে টপকে শীর্ষে উঠে গেলো সাকিব-নাসিরদের ঢাকা ডায়নামাইটস।