এ বি এন এ : ভারতকে নিউক্লিয়ার সাপ্লাইয়ারস গ্রুপে (এনএসজি) অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সমর্থন করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন ডিসিতে গতকাল অনুষ্ঠিত ওবামা-মোদী শীর্ষ বৈঠকের পর এ সমর্থন করার কথা সরকারি ভাবে জানাল দেশটি। এর আগে সুইজারল্যান্ডের কাছ থেকেও ওই সদস্যপদের জন্য সমর্থন আদায় করেছে ভারত। গতকাল ওবামার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক ঘণ্টা বৈঠক করেছেন মোদী। সেখানে এনএসজি নিয়ে আলোচনায় মোদী এ ব্যাপারে সুইস সমর্থনের বিষয়টি ওবামাকে জানিয়েছেন। এর পরে মেক্সিকোয় গিয়েও এনএসজি নিয়ে দরবার করবেন মোদী। তবে ভারতের এনএসজি সদস্যপদ নিয়ে আপাত্তি জানাতে পারে চিন। গ্রুপের ৪৮টি দেশই রাজি না হলে ভারতের আশা মিটবে না পরোক্ষভাবে এমন সাবধানতা জানিয়েছে বেইজিং।
গতকাল ওবামা-মোদী বৈঠক শেষে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে ওই বিষয়টি ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাস দমনের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে হাত মিলিয়ে চলার কথা বলেছে দু’দেশ। মোদী জানিয়েছেন, জি-২০ রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বৈঠকে ফের ওবামার সঙ্গে তাঁর দেখা হবে।
এছাড়া সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে অভিজাত আন্তর্জাতিক ক্ষেপণাস্ত্র (এমটিসিআর) এর সদস্যপদও বাগিয়ে নিয়েছে ভারত। দীর্ঘদিন এনএসজি ও এটিসিআর এর সদস্য হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল দেশটি। এ বিষয়ে আমেরিকা পুরোপুরি ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, এমটিসিআর-এ ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপত্তি করার শেষ তারিখ ছিল ৬ জুন। কিন্তু এ ব্যাপারে সদস্য দেশগুলি তাৎপর্যপূর্ণ নীরবতা পালন করায় স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের দরজা খুলে গেল। কূটনীতিকদের মতে, আমেরিকার সক্রিয়তাতেই এই ঘটনা সম্ভব হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে মতৈক্য তৈরি হয়ে গেলেও এখনই কোনও ঘোষণা হবে না। আগামী নভেম্বরে এমটিসিআর-এর অধিবেশনে ভারতের প্রস্তাব আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহীত হবে। এই ক্লাবের অংশ হওয়ার ফলে ভারত চালকহীন ‘প্রিডেটর ড্রোন’ বিমানের মতো অস্ত্র কিনতে পারবে আমেরিকার কাছ থেকে। ভারত উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানিও করতে পারবে বিভিন্ন দেশে।
ইতোমধ্যে দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র’ তৈরি শুরু করেছে। সেই ক্ষেপণাস্ত্রও এ বার তৃতীয় দেশে বিক্রি করতে পারবে দিল্লি ও মস্কো। তবে এই গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কিছু নিয়ম মানতে হবে তাদেরকে। যেমন, কোনও অবস্থাতেই ৩০০ কিলোমিটারের বেশি দূরে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যাবে না। উল্লেখ্য, ভারত এমটিসিআর এর ৩৫তম সদস্য হিসাবে গণ্য হবে। তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, সাধারণত পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তিতে (নন প্রোলিফারেশন ট্রিটি) সই করা দেশগুলিকেই এমটিসিআর-এর আওতায় আনা হয়। এ ক্ষেত্রে ওই চুক্তিতে সই না করেও ভারতের অন্তর্ভুক্তি কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল।