এবিএনএ : অবৈধ গর্ভপাতের জন্য নারীদের সাজা দেওয়ার প্রস্তাব পেশের কয়েক ঘণ্টা পরই তা প্রত্যাহার করে নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে তিনি কোনো নারী অবৈধ গর্ভপাত ঘটালে তাঁকে ‘কিছু না কিছু’ সাজা দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ওই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অবৈধ গর্ভপাতের জন্য নারীদের দণ্ড দেওয়ার পক্ষে তিনি। স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে তাঁর এ বক্তব্যে নারী অধিকার সংগঠন ও উদারনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সমালোচনার পর ট্রাম্প পিছু হটে এ বিষয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে বলেন, অবৈধ গর্ভপাতের কাজটি যিনি সম্পন্ন করবেন, কেবল তাঁর সাজা পাওয়া উচিত; নারীর নয়।
রিপাবলিকান পার্টির আনুষ্ঠানিক অবস্থান গর্ভপাতের বিপক্ষে।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচারণায় এবার শিক্ষার্থীদের উপদেশ দিয়েছেন। কলেজপড়ুয়াদের উপদেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমরা সব সময় ব্যর্থ লোকজনের আশপাশে থাকবে। ব্যর্থ লোকজন তোমাদের সম্মান করবে, তোমাদের কথা শুনবে।’ গত বুধবার দলীয় বাছাইপর্বের প্রচারণায় ট্রাম্প উইসকনসিন অঙ্গরাজ্য চষে বেড়ান। প্রচারণার ফাঁকে সেন্ট নরবার্ট কলেজের একদল শিক্ষার্থীর উদ্দেশে তিনি বক্তব্য দেন।
ট্রাম্প শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘অর্থনৈতিক সাফল্যকেই জীবনের সফলতা মনে করে অধিকাংশ মানুষ। ধারণাটি ভুল। পরিবারের প্রতি, সন্তানদের প্রতি ভালোবাসাও সফলতার জন্য জরুরি। স্ত্রী, পরিবার ও সন্তানদের নিয়ে সুখী পরিবারের মানুষই জীবনে বেশি সফল হয়।’ তবে তিনি এও বলেন, যদিও অর্থনৈতিক সফলতা জীবনকে সহজ করে তোলে।
২৪ ঘণ্টায় ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেওয়া একাধিক বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে মার্কিন গণমাধ্যম আবার গরম করে তোলেন। নারী সাংবাদিকের ওপর চড়াও হওয়ার কারণে তাঁর প্রচারণা দলের প্রধানের পদত্যাগের দাবিও উড়িয়ে দেন ট্রাম্প। চড়াও হওয়ার জন্য ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশি মামলা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জেনেভা কনভেনশনকে ‘যত সব অকাজের কাজ’ বলেও উল্লেখ করেছেন। জাতিসংঘের জেনেভা কনভেনশনের শর্ত অনুযায়ী সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে যুদ্ধ-সংঘাতের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। ট্রাম্প বলেন, এসব শর্তের কারণে মার্কিন সেনাদের ‘অনেক কিছু করার থাকলেও’ তাঁরা তা করতে পারেন না।
টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেই সম্ভবত মুসলমানরা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। মুসলমানদের ভাবতে হবে, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে আইএস সমস্যার সমাধান করতে হবে।
উইসকনসিন রাজ্যে আগামী সপ্তাহে রিপাবলিকান-দলীয় বাছাই নির্বাচন। সর্বশেষ জনমত জরিপে এখানে ট্রাম্প পিছিয়ে আছেন। সিনেটর টেড ক্রুজ অন্তত ১০ শতাংশ বেশি জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন এই রাজ্যে।
রাজ্য পর্যায়ের দলীয় বাছাইপর্বে এখনো এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। কিন্তু বিতর্কিত বক্তব্য ও নিন্দা-সমালোচনার ঝড়ের কারণে দলের শীর্ষ নেতারা তাঁকে দলের জন্য বোঝা মনে করছেন। বাছাইপর্বে ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে জুলাই মাসে দলের জাতীয় সম্মেলনে কী হতে পারে, তা নিয়ে গুঞ্জন চলছে। সম্মেলনে ট্রাম্পের মনোনয়ন অনুমোদন না হলে কী হতে পারে, সেটা নিয়েও আলোচনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।