এ বি এন এ : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে অবস্থিত দুই হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি এম আর হাসান ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে দায়ের করা রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত ওই অবৈধ স্থাপনা অপসারণের আদেশে কয়েক দফা নির্দেশনাও দেন।
আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী সাতদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসককে চট্টগ্রামের দুটি আঞ্চলিক পত্রিকায় অবৈধ স্থাপনাগুলো সরাতে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। স্থাপনা সরাতে ৯০ দিন সময় দেয়া হবে। এই ৯০ দিন পার হওয়ার পরও যদি নদীর দুই তীরে কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকে তবে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তা উচ্ছেদ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের পর উচ্ছেদের বিষয়ে উচ্চ আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
তবে আদালতের আদেশে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত নৌবাহিনীর তিনটি ও চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটিসহ ছয়টি স্থাপনাকে উচ্ছেদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শুনানিতে রিটকারীর পক্ষে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক।
২০১০ সালে কর্ণফুলীর দুই তীরের স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ একটি রিটটি দায়ের করে। রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ওই বছরের ১৮ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন।
রুলে কর্ণফুলী রক্ষায় কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসককে কর্ণফুলী নদীর তীরে কী পরিমাণ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
চার বছর পর ২০১৫ সালের ৯ জুন জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে কর্ণফুলীর দুই তীরে চট্টগ্রাম বন্দর ও নৌবাহিনীর ছয়টি স্থাপনাসহ মোট দুই হাজার ১৮৭টি স্থাপনা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
আদালত রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ চট্টগ্রাম বন্দর ও নৌবাহিনীর ছয়টি স্থাপনা বাদে বাকী দুই হাজার ১৮১টি স্থাপনা অপসারণের রায় ঘোষণা করেন।