জলবায়ু পরিবর্তনে হুমকির মুখে বৈশ্বিক জলচক্র: জাতিসংঘের সতর্কতা
ডব্লিউএমওর নতুন প্রতিবেদন জানাচ্ছে—হিমবাহ গলা, খরা ও বন্যা পৃথিবীর জলচক্রে অস্থিরতা তৈরি করছে, ঝুঁকিতে কোটি মানুষ।


এবিএনএ: জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক জলচক্র ক্রমশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অস্থিরতার ফলে বিশ্বজুড়ে খরা ও বন্যার প্রকোপ বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও অপ্রত্যাশিত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
ডব্লিউএমও প্রধান সেলেস্তে সাউলো সতর্ক করে বলেন, “বিশ্বের জলসম্পদ ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানি-সম্পর্কিত নানা দুর্যোগ, যা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।”
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাঞ্চল, অ্যামাজন অববাহিকা এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় গত বছর দীর্ঘস্থায়ী খরা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, মধ্য আফ্রিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু অঞ্চলে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত আর্দ্রতা তৈরি হয়েছে, যা ভয়াবহ বন্যা ও ঝড়ের কারণ হয়েছে।
ডব্লিউএমওর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সাল টানা ষষ্ঠ বছর যেখানে বিশ্বের নদী অববাহিকায় ভারসাম্যহীনতা দেখা গেছে। পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় হয় অত্যধিক মিঠাপানি, নয়তো মারাত্মক পানির অভাব লক্ষ্য করা গেছে।
স্টেফান উহলেনব্রুক, ডব্লিউএমওর পানি ও ক্রায়োস্ফিয়ার বিভাগের পরিচালক বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মানেই পৃথিবীর সবকিছুতে পরিবর্তন। এতে হ্রদগুলোর পানির গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে এবং টানা তৃতীয় বছরের মতো হিমবাহ সংকুচিত হচ্ছে।”
সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো—হিমবাহ গলা পানি গত এক বছরে বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ দশমিক ২ মিলিমিটার বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত কোটি মানুষ আরও বড় ঝুঁকিতে পড়েছে।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনকে উপেক্ষা করলে আগামী দিনে বৈশ্বিক জলচক্রের এই অস্থিরতা মানবসভ্যতার জন্য ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।