পেট্রোডলারের ঝলক ম্লান, সৌদি ফুটবল ছেড়ে কেন ফিরছেন বিশ্বতারকারা?
রোনালদো-নেইমারদের আগমনের পর গড়ে ওঠা জৌলুস হারাচ্ছে সৌদি ফুটবল; ইউরোপমুখী হচ্ছেন একে একে তারকারা


এবিএনএ: সৌদি ফুটবলে তারকাদের আগমন আর প্রস্থান—কেন একে একে ফিরে যাচ্ছেন রোনালদো-নেইমারদের সতীর্থরা?
মাত্র কয়েক বছর আগেই পেট্রোডলারের গর্জনে সৌদি প্রো লিগ ঝাঁকুনি দিয়েছিল বিশ্ব ফুটবলে। রোনালদো, নেইমার, বেনজেমা, ফিরমিনো, মানে—তালিকাটা ছিল চোখ ধাঁধানো। তখন মনে হচ্ছিল, সৌদি ফুটবল বুঝি হয়ে উঠবে নতুন ইউরোপ। কিন্তু বাস্তবতা অন্য কথা বলছে।
শুধু নেইমারই নন, সৌদি থেকে ফিরছেন একে একে আরও অনেক তারকা। কেউ ফিরছেন চোটের কারণে, কেউ মানিয়ে নিতে না পেরে। কেউ আবার বলছেন, ইউরোপীয় লাইফস্টাইল ও ফুটবল কাঠামোই তাঁদের আসল ঠিকানা।
নেইমার:
আল হিলালের হয়ে বিপুল বেতনে খেলা শুরু করেছিলেন নেইমার। কিন্তু চোটের কারণে মাঠে খুব বেশি সময় থাকতে পারেননি। পরে পারস্পরিক সমঝোতায় ফিরে গেছেন ছেলেবেলার ক্লাব সান্তোসে।
জন ডুরান্ড ও গ্যাব্রি ভেইগা:
মাত্র ২১ বছর বয়সে সৌদি লিগে নাম লিখিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এই দুই তরুণ ফুটবলার। কিন্তু ক্যারিয়ারের দিক বিবেচনায় তারা আবার ফিরে যাচ্ছেন ইউরোপীয় ক্লাবে—ডুরান্ড তুরস্কের ফেনারবাচেতে, আর ভেইগা পোর্তোতে।
তোলিস্কা ও লাপোর্তে:
ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার তোলিস্কা সৌদিতে আড়াই বছরের ক্যারিয়ারের পর এবার ইউরোপে ফিরেছেন। ফরাসি বংশোদ্ভূত স্প্যানিশ ডিফেন্ডার লাপোর্তেও ছেলেবেলার ক্লাব অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ে ফিরতে মরিয়া।
বেনজেমা ও মাহারেজ:
দুই মুসলিম তারকাও সৌদির সমাজ ও পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছেন না। বেনজেমা ক্লাব ছাড়তে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়; মাহারেজ থাকলেও পরিবার ম্যানচেস্টারে থেকে গেছে।
ওবামেয়াং ও হেন্ডারসন:
ওবামেয়াং ফিরে গেছেন ফ্রান্সের মার্শেই ক্লাবে। আর হেন্ডারসন, যিনি সমকামী অধিকারের পক্ষে কথা বলায় সৌদিতে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন, তিনিও ফিরে এসেছেন ইউরোপে।
✅ সৌদি ফুটবলের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ কি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?
যেখানে এক সময় পেট্রোডলার আকর্ষণ করত বিশ্বতারকাদের, সেখানে এখন তারাই ফিরছেন নিজের পুরনো ঠিকানায়। ফুটবলের পরিবেশ, সামাজিক রক্ষণশীলতা এবং পারিবারিক জীবনে অসামঞ্জস্যতা—এসব কারণেই সৌদি ক্লাবগুলোর ‘বড় তারকা ধরে রাখার ক্ষমতা’ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।