ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে দরিদ্র দেশগুলোর কোটি টাকার লবিং যুদ্ধ!
সোমালিয়া, ইয়েমেনসহ একাধিক দরিদ্র দেশ ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ লবিস্টদের দিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ, লক্ষ্য— মার্কিন সহায়তা বন্ধ ঠেকানো


এবিএনএ: বিশ্বের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল কয়েকটি দেশ মার্কিন প্রভাবশালী রাজনীতিক ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ লবিস্টদের মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করছে। তাদের উদ্দেশ্য— ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে আর্থিক ও মানবিক সহায়তা বজায় রাখা বা পুনরুদ্ধার করা।
সোমালিয়া, হাইতি, ইয়েমেনসহ অন্তত ১১টি দেশ ইতোমধ্যে ট্রাম্প-সম্পর্কিত লবিস্টদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এসব দেশের বেশিরভাগই মার্কিন ত্রাণ সংস্থা ইউএসএইড-এর পূর্বতন সুবিধাভোগী। ট্রাম্প জানুয়ারিতে পুনরায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পরই ইউএসএইড বন্ধের ঘোষণা দেন, যা গত সপ্তাহে কার্যকর হয়েছে।
গ্লোবাল উইটনেসের তদন্ত বলছে, ইউএসএইড বন্ধ হওয়ার পর কিছু দেশ তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে খনিজ সম্পদ, ব্যবহার করে রাজনৈতিক লবিংয়ে জড়িয়েছে। এর মধ্যে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো উল্লেখযোগ্য, যারা মার্কিন খনিজ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ১৭ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ লবিং ফার্ম ব্যালার্ড পার্টনার্সের সঙ্গে ১২ লাখ ডলারের চুক্তি করে কঙ্গো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিশ্চিত করতে চাইছে।
উল্লেখ্য, ব্যালার্ড পার্টনার্স ২০১৬ সাল থেকেই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ, এমনকি তাঁর নির্বাচনী প্রচারে অন্যতম বড় দাতা হিসেবেও পরিচিত।
এদিকে, সোমালিয়া ও ইয়েমেন বিজিআর গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স নামক লবিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে যথাক্রমে ৫.৫ লাখ ও ৩.৭২ লাখ ডলারে। বিজিআরের সাবেক অংশীদার শন ডাফি বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই চুক্তিগুলো মানবিক সাহায্যের বদলে প্রাকৃতিক সম্পদের বিনিময়ে হতে পারে, যা দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে আরও দুর্বল করে তুলবে। গ্লোবাল উইটনেসের ট্রানজিশন মিনারেল বিভাগের প্রধান এমিলি স্টুয়ার্ট বলেন, “এই দেশগুলো এখন আরও বেশি মরিয়া। ফলে তারা তাদের মূল্যবান সম্পদ শোষণের ঝুঁকিতে পড়ছে।”
বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে, ধনী দেশগুলোর সঙ্গে দরিদ্র দেশগুলোর এমন সম্পর্ক নতুন করে ভাবনার জন্ম দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে।