চেয়ারম্যান অপসারণ দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের টানা আন্দোলন, বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয়ের শঙ্কা
শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি দেশজুড়ে কর্মবিরতি, ৭ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলছে আন্দোলনকারীরা


এবিএনএ, ঢাকা:
চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে দেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে টানা ৮ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সারাদেশব্যাপী কর্মবিরতিতে গ্রাহক সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে ৮০টি সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ করছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। দেশের মোট ৪ কোটি ৮২ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে ৩ কোটি ৬৮ লাখই আরইবির অধীনে সেবা গ্রহণ করে থাকেন।
সমগ্র বাংলাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মী সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। আরইবি ও সমিতিগুলোর একীভূতকরণ, চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের স্থায়ী নিয়োগ এবং অভিন্ন চাকরি বিধি প্রণয়নের দাবিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের ওপর
আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, “বৃহস্পতিবারের মধ্যে যদি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা না হয়, তবে আমরা প্রতিটি অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইল হ্যান্ডসেট সমিতির সদর দপ্তরে জমা দিয়ে দেব।”
তারা অভিযোগ করেন, “আমাদের ন্যায্য দাবি তোলার কারণেই ইতোমধ্যে ২৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, ৪০ জন সাময়িকভাবে স্থগিত হয়েছেন এবং ছয় হাজারেরও বেশি কর্মীকে জোরপূর্বক বদলি করা হয়েছে। এর বাইরে ১৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করা হয়েছে।”
হয়রানিতে আতঙ্ক ও ঝুঁকিতে প্রাণ
আন্দোলনকারীরা জানান, মামলার ভয়ে অনেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। আতঙ্কের মধ্যে বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। তারা বলেন, “এই পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে যদি কারও প্রাণহানি ঘটে, তার দায়ভার কে নেবে?”
সংহতি ও রাজনৈতিক সমর্থন
এই আন্দোলনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সংহতি জানিয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের এ আন্দোলন বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে। দাবিগুলোর প্রতি সরকারের সাড়া না দিলে আরও ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
Share this content: