অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি, আমদানি-রফতানি কার্যত বন্ধ
জরুরি ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী পণ্য ছাড়া সকল আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে স্থবিরতা, এনবিআর বিলুপ্তির প্রতিবাদে রাজস্ব কর্মকর্তাদের আন্দোলন তীব্র হচ্ছে।


এবিএনএ:
সরকার ঘোষিত এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে শুল্ক ও কর কর্মকর্তারা আগামীকাল সোমবার (২৬ মে) থেকে সারা দেশের সকল শুল্ক দফতরে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে এ কর্মবিরতি।
জরুরি ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী ছাড়া সকল ধরনের আমদানি ও রফতানি কার্যক্রম কর্মবিরতির আওতায় থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রী চলাচল এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
রবিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার আবদুল কাইয়ুম ও উপকর কমিশনার রইসুন নেসা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে আজ সারাদিন ঢাকার আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবনে কর্মবিরতি পালিত হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনের নিচতলায় প্রধান ফটকের পাশে অবস্থান নেন এবং দুটি প্রধান প্রবেশপথ বন্ধ রাখেন। এতে এনবিআরের কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।
শুধু রাজধানী নয়, দেশের প্রধান বন্দরগুলোতেও এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল ও ভোমরাসহ বিভিন্ন শুল্ক স্টেশনেও রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে—রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ। এরপর থেকেই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ চার দফা দাবি জানিয়েছে:
১. জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল,
২. এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ,
৩. রাজস্ব সংস্কার-সম্পর্কিত সুপারিশগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ,
৪. সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্বব্যবস্থার চূড়ান্ত সংস্কার।
এই কর্মসূচির ফলে সারাদেশে রাজস্ব সংক্রান্ত কার্যক্রমে চরম ব্যাঘাত ঘটছে এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্দোলন থামাতে দ্রুত সরকারের উদ্যোগ কামনা করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
Share this content: