বাংলাদেশ

রাজধানীর হোটেলে প্রবাসী পরিবারের রহস্যময় মৃত্যু: সম্পত্তির হিসাব ঘিরে সন্দেহের ছায়া

মগবাজারের হোটেলে সৌদি প্রবাসী মনির, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার; সম্পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল কেয়ারটেকারের সঙ্গে, সন্দেহ ঘনীভূত

এবিএনএ:  রাজধানীর মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার হয়েছে সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন, তাঁর স্ত্রী স্বপ্না বেগম এবং তাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলে নাইমের নিথর দেহ। একসঙ্গে তিনটি মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সর্বত্র।

এ ঘটনার পর দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, প্রবাসী মনির হোসেন দেশে ফেরার পর তাঁর সম্পত্তি ও বাড়িভাড়া বাবদ অর্থ নিয়ে কেয়ারটেকার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। মামলার বাদী মনিরের ভাই, ইতালি প্রবাসী নুরুল আমিন মানিক।

এজাহারে বলা হয়, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিকুল মনিরের জমি ও বাড়ির দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। সুসম্পর্ক থাকার সুবাদে রফিকুলের ওপরই ভরসা করে প্রবাসে থেকে মনির ঢাকায় এবং গ্রামে সম্পত্তি কেনেন।

মামলার ভাষ্য অনুযায়ী, ঈদুল আজহার আগে দেশে এসে মনির রাজধানীর মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ হোটেলে স্ত্রী ও সন্তানসহ ওঠেন। অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়।

রোববার সকালে তিন মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর সোমবার রফিকুলকে আটক করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জালাল উদ্দিন সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানির সময় বিচারক বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ন ও দৃষ্টান্তমূলক মামলা। পুরো পরিবার একসঙ্গে নিঃশেষ হয়ে গেছে।”

রফিকুলের আইনজীবী জানান, তিনিও দুঃখিত এবং খাবার খেয়েছিলেন। বিচারক তখন বলেন, “একজন অসুস্থ হতে পারে, পুরো পরিবার একসঙ্গে মারা যাওয়ার ব্যাখ্যা প্রয়োজন।” রফিকুল জানান, তিনি হোটেল থেকে ভাত, মুরগির রেজালা, শুঁটকি ও আলু ভর্তা এনেছিলেন— স্বপ্নার পছন্দ ছিল শুঁটকি।

শুনানি শেষে আদালত রফিকুলের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক জানান, মনিরের ভাই নুরুল আমিন ইতালি থেকে ফিরে সোমবার রাতে রমনা থানায় হত্যা মামলা করেন।

এখন এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনের অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দেশ। তদন্তের পরই স্পষ্ট হবে— দুর্ঘটনা, না পরিকল্পিত হত্যা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button