“এক মাঘে শীত যায় না”—আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী হত্যার বিচার হবে: শাজাহান খান
আদালত থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের হুঁশিয়ারি—মব জাস্টিসে হত্যার বিচার হবেই


এবিএনএ: সাবেক নৌমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান অভিযোগ করেছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে মব জাস্টিসের মাধ্যমে হত্যা করা হচ্ছে। এসব ঘটনার বিচার হবেই বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।
সোমবার (২৩ জুন) আদালতে হাজিরা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, “এভাবে একজনও বাদ যাবে না। ১৬২ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন—এর শেষ দেখে ছাড়ব। মনে রাখবেন, এক মাঘে শীত যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “এটা কোনো স্বাভাবিক অবস্থা নয়। এভাবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের টার্গেট করে মব সৃষ্টি করে হত্যা করা হচ্ছে। যারা মব জাস্টিসে জড়িত, তারা কেউ ছাড় পাবে না।”
আদালতে এদিন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং শাজাহান খানকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের সবাইকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট এবং হ্যান্ডকাফে দেখা যায়। কাঠগড়ায় তোলার পর হ্যান্ডকাফ ও হেলমেট খোলা হয়। এরপর শাজাহান খান ও আনিসুল হক নিজেদের মধ্যে কথা বলেন এবং আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেন।
সালমান এফ রহমান পুরো সময়টি নিরবেই কাটান। সাংবাদিকরা আদালত শেষে তার বক্তব্য জানতে চাইলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
এই দিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম, সাজেদুর রহমান ওমর হত্যা মামলায় শাজাহান খান, আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যদিও তদন্ত সংস্থা পিবিআই তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়েছিল।
রিমান্ড শুনানিকালে শাজাহান খান বলেন, “বিজ্ঞ পিপি সাহেব বিএনপির বড় নেতা। বারবার ভুতুড়ে মামলায় আমাদের রিমান্ডে নিচ্ছেন কেন?” জবাবে পিপি ওমর ফারুক বলেন, “তারা সাধারণ আসামি নন, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকেই এসেছে।”
এছাড়া রিটন উদ্দিন হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে একদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে এবং রাসেল হত্যা মামলায় তার রিমান্ড আবেদন খারিজ করা হয়েছে। অপরদিকে, গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মন হত্যাচেষ্টা মামলায় রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহাইলের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
গত ২১ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় সাজেদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন এবং পরবর্তীতে মারা যান। তার পরিবারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা সহ ৮১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
রাজনৈতিক উত্তাপ এবং সহিংসতার প্রেক্ষাপটে এই মামলাগুলোর রায় ও বিচার আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর বড় প্রভাব ফেলবে বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত।