মোংলা বন্দরে নজিরবিহীন সাফল্য, লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রাজস্ব ও মুনাফা বৃদ্ধি
২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাহাজ আগমন থেকে রাজস্ব আয়— প্রতিটি সূচকে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ


এবিএনএ: বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রত্যেকটি সূচকে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। রাজস্ব আয়, জাহাজ আগমন, কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং— সব ক্ষেত্রেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সেই সঙ্গে নিট মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি টাকায়, যা পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০৩ শতাংশ বেশি।
বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সভায় উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) কাজী আবেদ হোসেন, প্রধান হিসাব কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, ট্রাফিক পরিচালক মো. কামাল হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
🔷 লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পারফরম্যান্স
সর্বশেষ অর্থবছরে ৮৩০টি জাহাজ মোংলা বন্দরে এসেছে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০০টি। কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০৪.১২ লাখ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন বেশি। কন্টেইনার হ্যান্ডলিংও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১,৪৫৬ টিইইউ, লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০,০০০।
রাজস্ব আয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যেখানে আয় হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা পূর্বের লক্ষ্যমাত্রা ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার চেয়ে প্রায় তিন গুণ।
🔷 সুবিধা ও সম্ভাবনার বিস্তারিত
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা বন্দরে নেই কোনো জাহাজ জট। কন্টেইনার খালাসে টার্ন এরাউন্ড টাইম মাত্র ১.৬৬ দিন বা ৪০ ঘণ্টা। রয়েছে ৭টি কন্টেইনার ইয়ার্ড, ৩৮টি সহায়ক জলযান, ১৩৪টি আধুনিক মেশিন, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, উন্নত নিরাপত্তা ও ন্যাভিগেশন সুবিধা।
বন্দর দিয়ে বর্তমানে যেসব পণ্য আমদানি হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে:
খাদ্যশস্য, সার, গাড়ি, গ্যাস, সয়াবিন তেল, জ্বালানী তেল, কয়লা, কাঠ, ক্লিংকার, লোহার পাইপ ইত্যাদি।
রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে:
গার্মেন্টস, পাটজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, কাঁকড়া, ক্লে, শুকনা মাছ ও মেশিনারি যন্ত্রাংশ।
🔷 উন্নয়ন প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বন্দরের উন্নয়নে বর্তমানে জেটি নির্মাণ, ইনারবার ড্রেজিং, চ্যানেল ন্যাভিগেশন ইত্যাদি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে জানান কাজী আবেদ হোসেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, সরকারের নির্দেশনা ও চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমানের নেতৃত্বে বন্দরের ব্যবস্থাপনা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রসূ। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয়ের মাধ্যমে বন্দর ব্যবহারকারী ও আয়ের পরিমাণ দুই-ই বৃদ্ধি পাচ্ছে।