দুই বছর পর অশান্ত মণিপুরে মোদির সফর: শান্তির বার্তা ও উন্নয়নের আশ্বাস
দীর্ঘ সহিংসতার পর মণিপুর সফরে গিয়ে শান্তি ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি


এবিএনএ: দীর্ঘ দুই বছর পর অবশেষে সহিংসতায় ক্ষতবিক্ষত মণিপুরে পা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার মিজোরামের আইজলে রেল প্রকল্প উদ্বোধনের পর তিনি মণিপুরের চূড়াচাঁদপুরে পৌঁছে শান্তি ও উন্নয়নের বার্তা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শান্তি না থাকলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। মণিপুরের মানুষ শান্তির পথ বেছে নিলে ভবিষ্যৎ হবে আরও উজ্জ্বল।”
২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই রাজ্যে রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় প্রায় ২৬০ জন নিহত ও হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। সেই থেকে বিরোধীরা বারবার দাবি জানালেও এতদিন সেখানে যাননি মোদি।
চূড়াচাঁদপুরের ত্রাণ শিবিরে আশ্রিত পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মোদি বলেন, মণিপুর সাহস ও দৃঢ়তার ভূমি। তিনি সবাইকে অতীতের বিভেদ ভুলে শান্তির পথে একসাথে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন, গত ১১ বছরে বিজেপি সরকারের আমলে মণিপুরে যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি জানান, ২২ হাজার কোটি টাকার রেল প্রকল্প চালু হয়েছে এবং গ্রাম-শহরে সমানভাবে রাস্তা ও বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
তবে মোদির সফর ঘিরে ইম্ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কংগ্রেসের কর্মীরা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করেন এবং বিজেপি শাসনকে দায়ী করে স্লোগান দেন। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এক্সে লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে ব্যস্ত থেকেছেন, অথচ মণিপুরবাসীর দুঃসময় পাশে ছিলেন না।” প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও অভিযোগ করেন, “এত দেরিতে আসা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জাতিগত সংঘাতের পর মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং পদত্যাগ করেন এবং বর্তমানে মণিপুর রাষ্ট্রপতির শাসনে পরিচালিত হচ্ছে।
এই সফরে শান্তি ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিরোধীদের অভিযোগ ও স্থানীয় বিক্ষোভ দেখিয়ে দিয়েছে—মণিপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনা এখনো প্রশমিত হয়নি।