ডাকসু নির্বাচন কাল: ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রস্তুতি চূড়ান্ত, সীমিত চলাচলে নিরাপত্তা জোরদার
ঢাবি ক্যাম্পাসে ৩৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা বলয়, ৩৯ হাজারের বেশি ভোটার, ৪৭১ প্রার্থী, বন্ধ থাকবে মেট্রো স্টেশন


এবিএনএ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ আয়োজনের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে প্রশাসন। আগামীকাল মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে নিরবচ্ছিন্নভাবে।
এবারের নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রে বসানো হয়েছে ৮১০টি ভোট বুথ। ভোটারদের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০,৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ১৮,৯০২ জন।
প্রথমবারের মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে ব্রেইল পদ্ধতিতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।
রোববার ছিল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন। দিনভর প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, লিফলেট বিতরণ ও ইশতেহার উপস্থাপনায় মুখর ছিল পুরো ক্যাম্পাস। প্রতিটি প্যানেল তাদের দাবির পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছুটে বেড়ায়।
ভোটের দিন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেতসহ প্রধান প্রবেশপথগুলো বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র বৈধ পরিচয়পত্রধারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন (অ্যাম্বুলেন্স, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস) ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। ভোটারদের সুবিধার্থে বাস সার্ভিস পরিচালনা করা হবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী।
ভোট কেন্দ্রের ভেতরে মোবাইল ফোন, স্মার্ট ওয়াচ, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, পানির বোতল বা অন্য কোনো তরল পদার্থ বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
ভোটে অংশ নিচ্ছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। ভিপি, জিএসসহ ২৮টি কেন্দ্রীয় পদ এবং হল সংসদের ১৩টি পদে নির্বাচন হবে।
এদিকে, নিরাপত্তা ও জনসমাগম এড়াতে ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টা থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ডিএমটিসিএল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৮তম ডাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয় ২০১৯ সালে, উচ্চ আদালতের নির্দেশে। ওই নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন নুরুল হক নুর এবং জিএস হন গোলাম রাব্বানী।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রথম ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালের পর দীর্ঘ ২৮ বছর কোনো নির্বাচন হয়নি। অবশেষে আদালতের রায় অনুযায়ী ২০১৯ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসুর ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হয়।