চীন-যুক্তরাষ্ট্র নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে সই: থেমে যাচ্ছে দীর্ঘদিনের বাণিজ্য যুদ্ধ?
চুক্তির মাধ্যমে উন্মুক্ত হচ্ছে চীনা বাজার, প্রত্যাহার হতে পারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা


এবিএনএ: বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি—চীন ও যুক্তরাষ্ট্র—দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পর অবশেষে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে প্রায় এক দশক ধরে চলা বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। চুক্তির বিষয়ে উভয় পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করেছি। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে চীনের বাজার আরও উন্মুক্ত হবে এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি করবে।”
যদিও চুক্তির নির্দিষ্ট শর্তগুলো তখন প্রকাশ করা হয়নি, শুক্রবার চীন সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের কিছু ‘নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা’ প্রত্যাহার করবে। একই সঙ্গে, চীনও রপ্তানি নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য পর্যালোচনা ও অনুমোদনের মাধ্যমে বাজারে ছাড় দেবে।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, গত মে মাসে জেনেভায় হওয়া বাণিজ্য আলোচনায় এই চুক্তির ভিত্তি তৈরি হয়। চুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে বিরল খনিজ সরবরাহে সম্মত হয়েছে। এই খনিজ উপাদানগুলো উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি, যেমন—বায়ু টারবাইন, স্মার্টফোন এবং যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত হয়।
লুটনিক বলেন, “চীন আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ রেয়ার মিনারেল সরবরাহ করবে, যা পাওয়ার পর আমরা চীনের ওপর আরোপিত পাল্টা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেব।”
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক চাপ বাড়ান। তিনি চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে মার্কিন বাজারে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করেন। চীনও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণে পিছিয়ে থাকেনি। এতে দুই দেশের মধ্যে টানা বাণিজ্য যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে, দুই পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি শুধু দুই দেশের মধ্যে নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক আবারও গতিশীল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।