ছত্তিশগড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২৭ মাওবাদী নিহত, উত্তপ্ত বনাঞ্চল
নারায়ণপুরের গভীর জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেল ২৭ মাওবাদীর


এবিএনএ:
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে আবারও রক্তাক্ত সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মাওবাদী অধ্যুষিত বনাঞ্চল। বুধবার (২১ মে) নারায়ণপুর জেলার ঘন জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৭ জন মাওবাদী বিদ্রোহী।
রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডোদের অংশগ্রহণে চালানো হয় এ অভিযানের পরিকল্পনা। গভীর গোপনীয়তায় পরিচালিত এই অভিযানে ব্যাপক গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
🔥 দীর্ঘদিনের সশস্ত্র লড়াইয়ে ফের রক্তপাত:
মাওবাদীদের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াই দীর্ঘদিন ধরেই চলমান। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছেন মাওবাদী যোদ্ধা, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ মানুষ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ছত্তিশগড়সহ ভারতের মধ্যাঞ্চলের খনিজসমৃদ্ধ এলাকাগুলোতে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের দাবিতে শুরু হওয়া এই বিদ্রোহে নতুন করে সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে।
🧨 মাওবাদী আন্দোলনের পটভূমি:
মাওবাদী বিদ্রোহের সূচনা হয় ১৯৬৭ সালে, চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে। এই গোষ্ঠী নিজেদের ‘নকশাল’ নামেও পরিচিত করে এবং বলছে, তারা বঞ্চিত আদিবাসীদের হয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিদ্রোহ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এক সময় ভারতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডে ১৫-২০ হাজার সশস্ত্র মাওবাদীর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ছিল।
🚨 বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রতিক্রিয়া:
বুধবারের সংঘর্ষে নিহতদের পরিচয় এখনও স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়নি। অভিযানের পর জঙ্গলে ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও, বিভিন্ন নিরাপত্তা বিশ্লেষক এটিকে বড়সড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন।
তবে অধিকারকর্মীরা বলছেন, শুধুমাত্র সামরিক অভিযান দিয়ে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়— দরকার রাজনৈতিক সংলাপ এবং আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা।
Share this content: