এক্সক্লুসিভ

অবিশ্বাস্য! ভয়ঙ্কর কুমিরে ঘেরা জলাভূমিতে ৩৬ ঘণ্টা টিকে রইলেন পাঁচজন

বলিভিয়ার আমাজনে ইঞ্জিন বিকল হয়ে কুমিরে ভরা জলাভূমিতে জরুরি অবতরণ, অলৌকিকভাবে প্রাণে বাঁচলেন পাঁচজন

এবিএনএ:   বলিভিয়ার আমাজন অঞ্চলের গভীর অরণ্যে ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন পাঁচজন যাত্রী। একটি ছোট বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হঠাৎ করে কুমিরে পূর্ণ এক জলাভূমিতে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। সেই মুহূর্ত থেকে শুরু হয় তাদের ৩৬ ঘণ্টার মৃত্যু-পিছনে-পালানো লড়াই।

গত বৃহস্পতিবার, ১ মে, বিমানটি রাডারের সিগন্যাল হারায়। এরপর নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বিমানের খোঁজ মেলে ইটানোমাস নদীর পাশের এক জলাভূমিতে, স্থানীয় কিছু জেলের সহযোগিতায়। উদ্ধারকৃত যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন তিনজন নারী, একজন শিশু এবং মাত্র ২৯ বছর বয়সী পাইলট আন্দ্রেস ভেলার্দে।

ভেলার্দে জানান, বিমানটি বাউরেস থেকে ত্রিনিদাদ শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। মাঝ আকাশে হঠাৎ করে ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিলে তাকে বাধ্য হয়ে কুমিরে ঘেরা এক জলাভূমিতে অবতরণ করতে হয়।

“বিমানটি দ্রুত নিচে নামছিল, আমি শেষ মুহূর্তে একটি জলাভূমি লক্ষ্য করি এবং সেখানেই নামাই। চারপাশে কুমিরে ভর্তি, কেউ কেউ ছিল মাত্র তিন মিটার দূরে,” বলেন ভেলার্দে।

এমনকি তারা বিশাল আকারের একটি অ্যানাকোন্ডা সাপও দেখেছিলেন, যা পরিস্থিতিকে আরও আতঙ্কজনক করে তোলে।

এই কঠিন সময়ে যাত্রীদের কাছে থাকা সামান্য কাসাভা ময়দা খেয়ে দিন কাটান তারা। তবে সবচেয়ে বড় সংকট ছিল নিরাপদ পানির। “চারদিকে কুমির, কোথাও যেতে পারছিলাম না, পানি ছিল না,” জানান পাইলট।

ভেলার্দের মতে, বিমানের ট্যাংক থেকে নির্গত পেট্রোলের গন্ধই সম্ভবত কুমিরদের কিছুটা দূরে রাখতে সাহায্য করেছিল।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া বেনি বিভাগের জরুরি অপারেশন প্রধান উইলসন অ্যাভিলা জানান, “উদ্ধার হওয়া পাঁচজনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।”

ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনা তৈরি হলেও বেনি স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক রুবেন তোরেস বলেন, “বিভিন্ন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করায় দ্রুত উদ্ধার সম্ভব হয়েছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

Share this content:

Back to top button