জাতীয়লিড নিউজ

রাজধানীর বাড্ডা কেন্দ্র করে ভূমিকম্প, বিশেষজ্ঞদের সতর্ক বার্তা

মাত্রা ৪.৩ হলেও বারবার ভূকম্পন বড় বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে, বলছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা

এবিএনএ: রাজধানী ঢাকাবাসী আবারও অনুভব করল ভূমিকম্পের হালকা ঝাঁকুনি। তবে এবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল শহরের মধ্যেই—বাড্ডায়। শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে অনুভূত এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৩। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

টেলিপ্রিন্টার অপারেটর মো. গোলাম মোস্তফা জানান, বাড্ডা এলাকায় উৎপন্ন এই কম্পনটি মৃদু ধরনের হলেও এর তাৎপর্য উপেক্ষা করা যাবে না। কারণ রাজধানীর ভেতরে উৎপন্ন ভূকম্পন ভবিষ্যতে ঝুঁকির সংকেত বহন করে।

এর আগে একই দিন সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে নরসিংদীর পলাশে অনুভূত হয়েছিল ৩ দশমিক ৩ মাত্রার আরেকটি ভূকম্পন। গত বৃহস্পতিবার মাধবদীতে উৎপন্ন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার মাঝারি ভূমিকম্প ছিল একশ বছরের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন।

আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা জানান, ছোট ও মাঝারি ধরনের কম্পনের ধারাবাহিকতা বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হিসেবে কাজ করে। তিনি বলেন, “১৯১৮ সালের পর দেশের ভেতরে মাধবদীর এ ভূকম্পন ছিল সবচেয়ে বড় এক শক। তখন শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ বছর পরপর বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটে। যেহেতু শত বছর আগে ডাউকি ফল্ট এলাকায় বড় ভূমিকম্প হয়েছিল, তাই আমরা বর্তমানে বড় ভূকম্পনের দ্বারপ্রান্তে থাকতে পারি।”

ইতিহাস বলছে, ১৮৬৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ১৪টি বড় ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে, যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৬ থেকে ৮ দশমিক ৬ এর মধ্যে। ১৮৯৭ সালে ৮ দশমিক ১ এবং ১৯৫০ সালে ৮ দশমিক ৬ মাত্রার ভূকম্পনের উৎপত্তি ছিল ভারতের আসামে।

ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল:
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, কুমিল্লা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অংশ ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকা শহরের কিছু অংশসহ মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রয়েছে মাঝারি ঝুঁকিতে।

অন্যদিকে খুলনা ও বরিশাল বিভাগকে ভূমিকম্পের কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

ভূমিকম্পের পুনঃপুন সতর্ক সংকেত বিশেষজ্ঞদের আরও প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। প্রস্তুতি, সচেতনতা ও সময়মতো পদক্ষেপই পারে এই ঝুঁকি মোকাবিলা করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button