এবিএনএ : শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে তাই সয়। কথাটা বলা যত সহজ, শরীর ঠিক রাখা আসলে অতটা সহজ নয়। তা পুরোটাই নির্ভর করে যত্নআত্তি আর সচেতনতার ওপর। তাই এই মহাশয়ের প্রতি যত্নবান থাকাটা খুব দরকার। শরীরে কোনো রোগ বাসা বাঁধলে কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। এ আর এমন কি—ভেবে অনেক সময় আমরা সেগুলোকে গুরুত্ব দিই না। তবে কিছু উপসর্গ বা শরীরে কিছু বদলের পরিণতি ভয়ংকর হতে পারে। তাই ১১ লক্ষণে আগে থেকেই সাবধান।
১. বুকে ব্যথা: বিশ্বাস করুন আর না–ই করুন, বুকে ব্যথা হওয়ার ৩০ কারণ থাকতে পারে। বুকে ব্যথা হলে সাধারণত আমরা কারণটা ভাবি অ্যাসিডিটি। এটা কিন্তু হৃদ্রোগও হতে পারে। বুকে ব্যথা হলে তাই অবহেলা করবেন না। নইলে বিপদ আসতে পারে। শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, শীতকালেও ঘাম, নাড়ির অনিয়মিত বা দ্রুত স্পন্দন থাকলে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
২. ক্লান্তি: দিনের যেকোনো সময় যেকেউ ক্লান্তিবোধ করতে পারেন। কিন্তু প্রায়ই ক্লান্ত হয়ে পড়লে সতর্কতা প্রয়োজন। খুব বেশি কাজের চাপ না পড়লেও যদি আপনি প্রায়ই ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাহলে সতর্ক হওয়া দরকার। অপুষ্টি বা থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যার কারণে এমনটি হতে পারে।
৩. মাথাব্যথা: মাথাব্যথার মাধ্যমে শরীর আপনাকে কিছু একটা জানাতে চায়। অনেকেই ব্যথানাশক ওষুধ দিয়ে সাময়িক উপশম পেতে চেষ্টা করেন। কিন্তু মাথাব্যথার কারণটা আরও গভীর হতে পারে। প্রচুর পানি পান ও মুক্ত পরিবেশে থাকার পরও সমস্যার সমাধান না হলে ভাবতে হবে। পানিশূন্যতার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। পুষ্টিহীনতা, ঘুমের স্বল্পতা অথবা মানসিক চাপ থেকেও কিন্তু এমন ব্যথা হতে পারে।
৪. পেটের গোলমাল: পাকস্থলী প্রতিদিন পরিষ্কার রাখাটা খুব জরুরি। প্রত্যেক মানুষের শরীরের আলাদা ধরন রয়েছে। তাই অভ্যাসগুলোও আলাদা। তবে যদি পেটের গোলমাল খুব বেশি হয়, তাহলে চিকিৎসা প্রয়োজন। দিনে কয়েকবার প্রসাধন কক্ষে যেতে হলে, পেটের বর্জ্যে পরিবর্তন দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।
৫. ওজন কমে যাওয়া: হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া মারাত্মক একটি লক্ষণ। এ রকম হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। ডায়বেটিস, ক্যানসার, ভাইরাসের সংক্রমণ, পেটের অসুখ, হতাশাসহ নানা অসুখের কারণে ওজন কমে যেতে পারে। যত দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন তত দ্রুত উপকার পাবেন।
৬. তিল ও আঁচিল: শরীরে হঠাৎ কোনো দাগ দেখতে পেলে সাবধান। শরীরে হঠাৎ করে তিল বা আঁচিলের সংখ্যা বেড়ে গেলেও নজরদারি দরকার। তিল বা আঁচিল ক্ষতিকর নয়। কিন্তু তিল বা আঁচিলের বদল থেকে বড় সমস্যা হতে পারে।
৭. চুল পাতলা হয়ে যাওয়া: নারীদের ক্ষেত্রে চুলের ঘনত্ব কমে যাওয়াটা ভয়ংকর। যদি খুব বেশি চুল পড়ে যেতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। পুষ্টিহীনতা বা কোনো অসুখ থেকে এমনটা হতে পারে।
৮. নাক ডাকা: হৃদ্রোগ, ক্লান্তি নাক ডাকার কারণ হতে পারে। শরীর যথেষ্ট অক্সিজেন না পেলেও এমনটা হতে পারে। ওজন কমালে নাক ডাকা কমতে পারে। সমস্যাটি নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ভালো।
৯. ত্বকের সমস্যা: ত্বক শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ত্বকে র্যাশ, একজিমা, সংক্রমণও শরীরের একধরনের বার্তা। শরীর এ রকম পরিস্থিতিতে কোনো গোলযোগের সংকেত দেয়। পুষ্টির অভাব, অ্যালার্জি থেকেও এমনটা হতে পারে।
১০. পিপাসা: দৈনিক দুই লিটার পানি পান করা শরীরের জন্য ভালো। এর চেয়ে বেশি পানি পান করলে বা অনিয়মিত পানি পান করলে জটিল সমস্যা হতে পারে। বারবার পানি পিপাসা হৃদ্রোগ বা কিডনিসংক্রান্ত জটিলতার কারণ হতে পারে। টাইপ ২ ডায়বেটিসের লক্ষণও হতে পারে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করাটা জরুরি।
১১. ঠোঁট ফাটা: আপনার কি প্রায়ই ঠোঁট ফেটে যায়? কখনো ভেবেছেন এর কারণ কী হতে পারে? ভিটামিন বি–এর অভাবে এমনটা হতে পারে। বি ভিটামিনের অভাব থাকলে রক্তশূন্যতা হতে পারে। পপকর্ন, লবণ, অলিভ ওয়েল, ঝাল লাল মরিচ খেলে বি ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হতে পারে।